জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমৃত্যু অনশন
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণ–অনশন শুরু করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান, গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম আল তারিক ও গালিব হাসান, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষার্থী (আইবিএ) ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান ও কাজী মেহরাব।
অনশনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কর্ণপাত করছে না। তাঁরা গত বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই সময় তাঁরা প্রশাসনকে আজকের মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল করার সময় বেঁধে দেন এবং দাবি পূরণ না হলে গণ–অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। প্রশাসন দাবি মেনে না নেওয়ায় তাঁরা আজ গণ–অনশন শুরু করেছেন।
পোষ্য কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে নাদিয়া রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালে কোটা সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কারের আন্দোলন। আমরা সব অযৌক্তিক কোটার বিলুপ্তি চেয়েছিলাম। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে প্রশাসনে আসীন হয়ে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বহাল রাখার মাধ্যমে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে। সেই জায়গা থেকেই আমরা আজ আমরণ গণ–অনশন পালন করছি।’
অনশনকারী আরেক শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও পোষ্য কোটা রয়েছে। যার কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছেন, যাঁরা অধিক নম্বর পেয়েও শুধু পোষ্য কোটার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না। অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে পোষ্য কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হবেন এবং দেশ ও জাতির জন্য অবদান রাখবেন। যতক্ষণ না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল হয়, ততক্ষণ আমরা এখানে অবস্থান করব।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি। যেহেতু এই কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সেহেতু এটি সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর আমরা আজ আমরণ গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।’