কিশোর গ্যাংয়ের কাণ্ড, মীমাংসার দেড় ঘণ্টা পর এসে খুন

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় তরুণ খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার সাতজনছবি: সংগৃহীত

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে মোটরসাইকেলের হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়ে যায়। এর দেড় ঘণ্টা পর আবার এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষ হামলা ও ছুরিকাঘাত করে। এতে একজন নিহত ও আরেকজন আহত হন। পুলিশ বলছে, এটি কিশোর গ্যাংয়ের কাণ্ড।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার পুলিশ এ তথ্য জানায়। গ্রেপ্তার সাতজন হলেন জাহিদুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, ইকবাল হোসেন, শাহরিয়ার আল আহমেদ, তাহরিয়ার আহমেদ, মারুফ চৌধুরী ও জুবায়ের বাশার। তাঁদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার রাতে মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার পাইপের বিকট শব্দকে কেন্দ্র করে নিহত মনিরুজ্জামান রাফি ও জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও মারামারি হয়। সমুদ্রসৈকত এলাকার ব্যবসায়ী মো. রবিনের দোকানে উভয় পক্ষকে বসিয়ে মীমাংসা করে দেওয়া হয়। যে যাঁর মতো চলে যান। এর দেড় ঘণ্টা পর ভোর সাড়ে চারটার দিকে জাহিদুল তাঁর লোকজন নিয়ে এসে হামলা চালান। এতে ছুরিকাঘাতে নিহত হন একজন। আহত হন আরেকজন। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মা জান্নাতুল ফেরদৌস বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বন্ধু মো. রায়সানসহ কয়েকজনকে নিয়ে পশুর হাটে গরু দেখা শেষে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যান মনিরুজ্জামান রাফি। তাঁরা দুটি মোটরসাইকেলে করে ঘোরাফেরার সময় মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার পাইপের বিকট শব্দকে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও মারামারি হয়। স্থানীয় এক দোকানে দুই পক্ষের মধ্যে বিষয়টি আপস হয়ে যায়। দেড় ঘণ্টা পর সাড়ে চারটার দিকে জাহিদুল আরও লোকজন নিয়ে এসে মনিরুজ্জামান ও তাঁর বন্ধুর ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে মারা যান মনিরুজ্জামান।

কিশোর গ্যাংয়ের কাণ্ড বলছে পুলিশ

মনিরুজ্জামান রাফি খুনের ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে কি না, প্রশ্নের উত্তরে নগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই সদ্য কৈশোর পেরিয়ে উঠতি বয়সের তরুণ। এরা গভীর রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। ধরে নেওয়া যায়, এটি কিশোর গ্যাংয়ের হত্যাকাণ্ড। ৪ জনের ওপর ১৫ জনের একটি দল হামলা চালায়।

শাকিলা সুলতানা আরও বলেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাওয়ার পর আবার মারামারি করেন। মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার পাইপের বিকট শব্দ নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পাড়া-মহল্লায় যেসব কিশোর গ্যাংয়ের ঘটনা ঘটে, সেগুলোর মতো।