যশোরে ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
যশোরে ৬ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে নাজমুল হক ওরফে বান্দা আলী (৩৬) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া নাজমুল হক যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ঠাকুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ধর্ষণের শিকার শিশুটি বাঘারপাড়া উপজেলার এক ব্যক্তির মেয়ে। সে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত স্থানীয় একটি মক্তবের ছাত্রী ছিল।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর সরকারি কৌঁসুলি সেতারা খান বলেন, ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নাজমুল হক নামের ওই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আসামি কারাগারে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর সকাল থেকে ওই শিশুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে নাজমুলও তল্লাশি করছিলেন। এক সময় নাজমুলকে তাঁর বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় গর্ত খুঁড়তে দেখেন প্রতিবেশীরা। সেখানেই ওই শিশুর একটি স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে নাজমুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে ফেললে তিনি ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা স্বীকার করেন এবং লাশ তাঁর ঘরের খাটের নিচে রাখা আছে বলে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং নাজমুলকে আটক করে।
এ ঘটনায় ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। আটকের পর নাজমুল আদালতে হত্যা ও ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঘারপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আওয়াল হোসেন।
সরকারি কৌঁসুলি সেতারা খাতুন বলেন, মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আদালত বাদী ও আসামির উপস্থিতিতে মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর আদালত নাজমুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রায়ে মামলার বাদীসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান।