২ হাজার ৩০০ বছর পুরোনো বৌদ্ধবিহার দেখে মুগ্ধ ৩৪ কূটনীতিক

রামুর রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারে স্থাপিত সম্রাট অশোকের আবক্ষ মূর্তি দেখছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের ৩৪ কূটনীতিক ও মিশনপ্রধান। বুধবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজার শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে রামুর রাজারকুল পাহাড়ে ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের ৩৪ কূটনীতিক ও মিশনপ্রধান। বুধবার সকালে সড়কপথে বিদেশি অতিথিরা বৌদ্ধবিহার দেখতে যান। খ্রিষ্টপূর্ব ২৬৮ অব্দে নির্মিত স্থাপনাটি দেখে অতিথিরা মুগ্ধ হন।

সকালে সড়কপথে কূটনীতিকেরা ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারে পৌঁছালে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিহারের অধ্যক্ষ জ্যোতিসেন মহাথের। কূটনীতিকেরা বৌদ্ধবিহারটি ঘুরে দেখেন। বিহারের প্রতিষ্ঠাকাল, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন বিহারের অধ৵ক্ষ। কূটনীতিকদের সম্মানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি দিয়ে তাঁদের আপ্যায়ন করা হয়।

জ্যোতিসেন মহাথের প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড় ও সমতলের ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধবিহারের সবকিছু দেখে মুগ্ধ হয়েছেন ৩৪ কূটনীতিক। তাঁরা বিহারের আঙিনায় স্থাপিত সম্রাট অশোক ও চীনা পর্যটক হিউয়েন সাঙের আবক্ষ মূর্তিসহ বৌদ্ধ পুরাকীর্তি দেখে অভিভূত হন। কূটনীতিকদের কেউ কেউ কক্সবাজার অঞ্চলের বৌদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনাকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার প্রধান নাঈম উদ্দিন আহমেদ, সচিব মাশফি বিনতে সামস, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসাইন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নিরুপম মজুমদার, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, জগৎজ্যোতি চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার হোম পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রামুর প্রাচীন রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার পরিদর্শনে বিভিন্ন দেশের ৩৪ কূটনীতিক। বুধবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশেষ ট্রেনে চড়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে পৌঁছান কূটনীতিকরা। দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানী সৈকতের একটি তারকা হোটেলে তাঁরা রাতযাপন করেন।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ও হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও দর্শনীয় স্থান দেখাতে ৩৪ কূটনীতিককে কক্সবাজার ভ্রমণে আনা হয়। হাজার বছরের প্রাচীন রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি ঝরনাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখে বিদেশি অতিথিরা মুগ্ধ হন। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে কক্সবাজারের সৌন্দর্য আরও প্রচারিত হবে।

আরও পড়ুন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসেডর আউট রিচ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এ সফরে রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসোভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ মিশনপ্রধান। আজ বিকেলে সড়কপথে তাঁরা কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ফিরে ঝিনুক মার্কেট ও পর্যটন মার্কেট পরিদর্শন করেন।