হলটিতে বাইরে থেকে খাবার আনা নিষেধ

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সুহাসিনী দাস হলছবি: সংগৃহীত

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সুহাসিনী দাস হলে সম্প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে। হলের পাঁচটি নির্দেশনার মধ্যে শেষ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হল থেকে রান্না করা খাবার বাইরে পাঠানো এবং বাইরে থেকে পার্সেল করে দুপুর ও রাতের খাবার হলে আনা যাবে না। এমন নির্দেশনা জারির পর থেকে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি উল্লেখ করে অনেকে সমালোচনা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১১ ফেব্রুয়ারি হলের প্রভোস্ট সাঈদা সুলতানা এমন নির্দেশনা দিয়েছেন। হলটির আসন সংখ্যা ৩০০। এর মধ্যে ২৫৯ জন ছাত্রী হলে থাকেন।

নোটিশে নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, আবাসিক ছাত্রী ছাড়া কোনো বহিরাগত ছাত্রীকে হলে থাকতে দেওয়া যাবে না। যেসব ছাত্রী বহিরাগত বা অন্য হলের ছাত্রীদের প্রশ্রয় দিয়ে হলে রাখবে, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হলে বৈদ্যুতিক সামগ্রী হিটার, রাইস কুকারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ব্যবহার করা যাবে না। সর্বশেষ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রান্না করে হল থেকে কোনো খাবার বাইরে পাঠানো এবং বাইরে থেকে পার্সেলে করে দুপুরের ও রাতের খাবার হলে আনা যাবে না।

এমন নির্দেশনায় ওই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে। হলের কীটতত্ত্ববিদ বিভাগের ছাত্রী বলেন, হলের ডাইনিংয়ের খাবার অনেক সময় পছন্দ হয় না। এতে বাইরে থেকে কেউ রান্না করা খাবার এনে থাকলে দোষের কী। আগে থেকেই ছাত্রীরা বাইরে থেকে রান্না করা খাবার এনে খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার বাড়ি থেকে মাঝেমধ্যে রান্না করা খাবার নিয়ে আসেন। এতে হলের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়বেন।

হলের আরেক শিক্ষার্থী নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বাইরে থেকে খাবার না আনার নির্দেশনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তবে সরাসরি ভয়ে কেউ নির্দেশনার বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছেন না। তবে হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সুহাসিনী দাস হলের প্রভোস্ট সাঈদা সুলতানা বলেন, হলের অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন আবাসিক বাসাবাড়ি থেকে রান্না করা খাবার মাসিক চুক্তিতে কিনে থাকেন। এমন বাড়তি খরচ আবার সব শিক্ষার্থীর জন্য চাপও। আবার হলের কক্ষগুলোতে রান্নার সামাগ্রী নিষেধ থাকলেও সেটি একাধিকবার উদ্ধার করা হয়েছে। এতে হলের বিদ্যুতের গোলযোগ হয়। সেটি বন্ধ করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রভোস্ট জানান, হলের প্রতিটি তলায় আলাদা করে রান্নার চুলা রয়েছে। সেগুলোতে ছাত্রীরা প্রয়োজনে রান্না করে খেতে পারেন। হলে ২৫৯ জন ছাত্রী থাকেন। তাঁদের প্রত্যেকের সামর্থ্য এক নয়। বাইরে থেকে অধিকাংশজন খাবার কিনে আনলে ডাইনিং চালানো সম্ভব হয় না। তবে পরীক্ষার জন্য কেউ রান্না করতে না পারলে কোনো সময় মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া হয় না।

এমন নির্দেশনার সমালোচনা সম্পর্কে সাঈদা সুলতানা আরও বলেন, ‘শুনেছি কিছু শিক্ষার্থী বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করছেন। তবে এ বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করেননি। তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে হলে ছাত্রীরা কী চাচ্ছেন, সেটি খোঁজ নেবেন।’