উত্তরা এক্সপ্রেস দুই বছর ধরে বন্ধ, চালুর দাবি

পার্বতীপুর-রাজশাহী পথে চলাচলকারী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুই বছর ধরে বন্ধফাইল ছবি

দিনাজপুরের পার্বতীপুর জংশন থেকে রাজশাহীমুখী উত্তরা এক্সপ্রেস নামের লোকাল ট্রেনটি প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ আছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ অঞ্চলে চলাচলকারী যাত্রীরা।

রেলওয়ের সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ৫টি কোচ ও ১টি লাগেজ ভ্যান নিয়ে ট্রেনটি চলাচল করত। ওই ট্রেনে চেপে নীলফামারীর সৈয়দপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, হিলি, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, জয়পুরহাট, আক্কেলপুর, বগুড়ার শান্তাহার, হাসানগঞ্জ, নাটোর, আবদুলপুর, রাজশাহীর আড়ানি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করতেন।

স্থানীয় একাধিক যাত্রী বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিন ভোর সোয়া ৪টায় পার্বতীপুর জংশন স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যেত। পরে রাজশাহীতে পৌঁছাত বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। ফিরতি ট্রেন হিসেবে দুপুর সোয়া ১২টায় রাজশাহী থেকে আবার পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যেত। এর যাত্রীদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। ফলে অঞ্চলটির আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ট্রেনটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। লোকাল ট্রেন হওয়ায় ট্রেনটি প্রতি স্টেশনে দাঁড়াত এবং এর ভাড়াও ছিল তুলনামূলক কম। ফলে বেশ জনপ্রিয় ছিল এটি। ট্রেনটি চালুর ব্যাপারে নিয়মিতভাবে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

পার্বতীপুরের শিক্ষক মাহফুজুল ইসলাম বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিল রংপুরের সঙ্গে রাজশাহীর বিভাগের সেতুবন্ধ। শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ট্রেনটিতে প্রচুর যাত্রী যাতায়াত করতেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কেন ট্রেনটি বন্ধ রেখেছে, তা বোধগম্য নয়।

সৈয়দপুর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন বলেন, উত্তরা এক্সপ্রেস খুব ভোরে ছেড়ে যেত। ফলে সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীদের কাছে ট্রেনটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৈয়দপুর-পার্বতীপুরের দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। তাই সৈয়দপুরের যাত্রীরা অনায়াসে পার্বতীপুরে গিয়ে ট্রেনটি ধরতে পারতেন। তিনি আবার ট্রেনটি চালুর দাবি জানান।

উত্তরা এক্সপ্রেস কোচের সংকটের কারণে দুই বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় বলে জানান পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার এস এম রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন এ কারণে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ রাজস্ব হারাচ্ছে।

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কোচ–সংকট আছে, তাই উত্তরা এক্সপ্রেস বন্ধ আছে। তবে আশার কথা হলো, ভারত থেকে ২০০ কোচ আমদানি করা হচ্ছে। তখন সংকট থাকবে না। ফলে ৬ মাসের মধ্যে উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করা সম্ভব হবে।’