নৌশ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, সদরঘাট টার্মিনালে চলাচল স্বাভাবিক

ঢাকা নদীবন্দরে সদরঘাট টার্মিনালে পন্টুনে ভেড়ানো লঞ্চে উঠছেন যাত্রীরা। আজ বেলা ১১টার দিকেছবি: প্রথম আলো

নৌশ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, পুলিশি হয়রানি বন্ধ করাসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন নৌশ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন।

ধর্মঘট প্রত্যাহার করায় ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে গেছে। সদরঘাট টার্মিনালে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ সম্পর্কে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহআলম বলেন, ‘নৌযানশ্রমিকদের ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আমাদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালের নৌযান পরিদর্শক শেখ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকা নদীবন্দরে যাত্রীবাহী লঞ্চ এসেছে ৩৯টি। আর ঢাকা নদীবন্দর থেকে ছেড়ে গেছে ১৩টি লঞ্চ।

আরও পড়ুন

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চল থেকে সদরঘাট টার্মিনালে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ পন্টুনে ভিড়ছে। যাত্রীরা পরিবার–পরিজন নিয়ে নিজ নিজ গন্তেব্যের লঞ্চে উঠছে। টার্মিনাল এলাকায় নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
চাঁদপুরগামী এমভি ময়ূরী-১০ লঞ্চের কর্মচারী সাত্তার মিয়া বলেন, ‘শুনেছি, গত সোমবার দিনে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ধর্মঘট ডেকে আবার রাতেই প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আমরা কাজে যোগদান করেছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নৌযানশ্রমিক জানান, ‘আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। কিন্তু শ্রমিকনেতা শাহআলম ও লঞ্চ মালিকপক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়া না হওয়ায় মাঝেমধ্যে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। পরে আবার প্রত্যাহারও করা হয়। আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। নৌযানশ্রমিকদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনা করে যৌক্তিক দাবি পূরণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

শ্রমিকদের ১১ দফার মধ্যে রয়েছে নৌযানশ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেওয়া; নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি-ছিনতাই ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা; নৌপথের নাব্যতা রক্ষা; নৌযানশ্রমিকদের পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র দেওয়া এবং রাতে চলাচলের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা। এ ছাড়া সব মালিক সমিতিকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে সব বন্দরে পণ্য পরিবহন, মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক অমীমাংসিত বিষয়ে আবার চুক্তি করা। চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপদে জাহাজ রাখার জন্য শঙ্খ নদকে উপযোগী করা, চট্টগ্রাম বন্দরে নাবিকদের নিরাপদে ওঠা–নামার জন্য পাঁচটি ঘাট ইজারামুক্ত করা, আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া মাস্টার ও ড্রাইভার সনদ বাতিলের কার্যক্রম বন্ধ করা।