মুন্সিগঞ্জে নৌকার কর্মীকে ছাত্রলীগ নেতার গুলি

গুলিবিদ্ধ তরুণকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য বের করা হচ্ছে। সোমবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের এক কর্মীকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়েছে। এ সময় আরও একজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সোয়া একটার দিকে উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের সিপাহীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলার রামপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত শেখের নেতৃত্বে গুলি ও মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনার সিসিটিভির একটি ফুটেজ পাওয়া গেছে। তাতে প্রান্ত শেখকে গুলি করতে দেখা যায়।

গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম আবিদ হাসান ওরফে শোভন (২৭)। তাঁর বড় ভাই ফরহাদ হোসেন (৩১) জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। শোভন ও ফরহাদ এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের পক্ষে কাজ করেছিলেন। আর ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত শেখ নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সালের কর্মী ছিলেন।

আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে পক্ষে-বিপক্ষে থাকাকে কেন্দ্র করে ফরহাদ ও আবিদদের সঙ্গে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সালের অনুসারী প্রান্ত শেখদের বিরোধ চলছিল। আজ দুপুরে ফরহাদ স্কুলের ক্লাস শেষ করে সিপাহী এলাকায় বাড়ি ফিরছিলেন। ওই এলাকার একটি ব্যাংকের কাছাকাছি এলে মোটরসাইকেলের করে প্রান্ত তাঁর দলবল নিয়ে ফরহাদকে আটকে মারধর করেন। খবর পেয়ে আবিদ তাঁর ভাইকে বাঁচাতে এলে প্রান্ত পিস্তল উঁচিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর (আবিদ) পায়ে গুলি করেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন এগিয়ে এলে দলবল নিয়ে পালিয়ে যান প্রান্ত। পরে স্থানীয় কয়েকজন আহত ফরহাদ ও গুলিবিদ্ধ আবিদকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবিদকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন

পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করছেন ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত শেখ।সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের সিপাহীপাড়া এলাকায়
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম কালাম প্রধান বলেন, দুপুরে দুজন আহত রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের পায়ে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এটি গুলি কি না, বোঝা যাচ্ছিল না। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘নৌকার পক্ষে কাজ করায় অনেক দিন ধরে প্রান্ত আমাদের হুমকি–ধমকি দিচ্ছিল। বাড়ি ফেরার রাস্তায় আমাকে বেদম মারধর করেছে। আমার ভাই আমাকে বাঁচাতে এলে জনসমক্ষে বা পায়ে গুলি করেছে। নৌকার নির্বাচন করাটাই কি আমাদের অপরাধ? আমি এর বিচার চাই।’

এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক প্রান্ত শেখ। এ বিষয়ে জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল থান্দার খায়রুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ ও অভিযুক্ত দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। এর জের ধরে আজকের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমরা পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’