ওপাশে বিএসএফ এপাশে বিজিবি, শূন্যরেখায় যুবকের ৪ ঘণ্টা

পঞ্চগড় সীমান্তের করতোয়া নদীর বালুচরে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে বিএসএফের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে বিজিবি। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার আমতলা এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

করতোয়া নদীর ভারতীয় অংশে এক ব্যক্তিকে ঠেলে নদীতে নামিয়ে দিচ্ছিলেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা। বিষয়টি দেখে নদীর এপারে বাংলাদেশ অংশে অবস্থান নেয় টহলরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একপর্যায়ে নদীর হাঁটুপানি মাড়িয়ে শুকনা বালুচর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকেন ওই ব্যক্তি। বিজিবি-বিএসএফের বাধায় কোনো দিকেই যেতে না পেরে বালুচরের একটি গাছের গুঁড়িতে বসে পড়েন তিনি।

প্রায় চার ঘণ্টা পর বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকে জানা যায়, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি। বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। পরে অন্যান্য কার্যক্রম শেষ করে বিজিবি তাঁকে ফেরত এনে পুলিশে সোপর্দ করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের আমতলা এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের করতোয়া নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তির নাম সুজন আলী (৪৭)। তিনি মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুর এলাকার শামসুল হকের ছেলে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন। তবে তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

দুপুরে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, করতোয়া নদীর মাঝে বালুচরে একটি গাছের গুঁড়িতে বসে আছেন ওই ব্যক্তি। নদীর ওপারে ভারতের অংশে দাঁড়িয়ে আছেন বিএসএফ সদস্যরা। এপারে বিজিবির সদস্যরা পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি পাঠাচ্ছেন বিএসএফের কাছে। এ সময় বাংলাদেশ অংশে বেশ কিছু উৎসুক লোকজন জড়ো হন।

বিজিবির মীরগড় বিওপির কোম্পানি কমান্ডার নজরুল ইসলাম সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএফের কয়েক সদস্য মধ্যবয়সী ওই ব্যক্তিকে নদীতে নামিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের দিকে পাঠাচ্ছিলেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে বিজিবির টহল দল অবস্থান নেয়। তিনি বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় তা জানতে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। বিএসএফ সাড়া দিলে বেলা তিনটায় সীমান্তে পতাকা বৈঠক হয়। পরে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি জানার পর ফেরত এনে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান বলেন, ওই ব্যক্তির কথায় অসংলগ্নতা আছে। মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। বেশ কয়েক দিন আগে কাজের খোঁজে পঞ্চগড়ে আসেন। এখানে কোনো এক খাবার হোটেলে কাজও করেছেন বলে জানা গেছে। ভারতে গেলে কাজ পাওয়া যাবে জানতে পেরে তিনি ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত এনে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তিকে বিজিবি থানায় নিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।