‘ষাঁড়টি বের করতেই ১৫ থেকে ১৬ জন লোক লাগে’

‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ নামের ষাঁড়টি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৯ ফুট এবং উচ্চতায় ৬ ফুট। গতকাল দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কালো রঙের কারণে ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। দৈর্ঘ্যে এটি প্রায় ৯ ফুট এবং উচ্চতায় ৬ ফুট। আর ওজন ২৩ মণের কাছাকাছি। বড়সড় হলেও স্বভাবে বেশ শান্ত এটি। ফ্রিজিয়ান সাহিওয়াল জাতের ষাঁড়টির দেখা মিলবে নড়াইল সদর উপজেলার তারাপুর গ্রামে।

দাবি করা হচ্ছে, পুরো উপজেলায় ব্ল্যাক ডায়মন্ডের চেয়ে বড় গরু আর একটিও নেই। এটিকে এবার কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন মালিক মিল্টন শিকদার। তাঁর মালিকানাধীন ‘চিত্রা অ্যাগ্রো’ নামের একটি খামারে ব্ল্যাক ডায়মন্ডসহ মোট ৫৫টি ষাঁড় গরু এবার বিক্রির উপযোগী করা হয়েছে।

গতকাল রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, তারাপুর গ্রামে বিলের ভেতর খোলামেলা পরিবেশে খামারটি তৈরি করা হয়েছে। এতে মোট ৭৫টি গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। তার মধ্যে ৫৫টি ষাঁড় এ বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। খামারে ঢুকতেই নজর পড়ে কালো রঙের বিশাল দেহের ব্ল্যাক ডায়মন্ড ষাঁড়টির দিকে। শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এটি।

ষাঁড়গুলোর দেখাশোনা করছেন চার কর্মী। তাঁদের মধ্যে আরহাম শিকদার ও রহমান বিশ্বাস বলেন, খামারে অনেক গরুর মধ্যে ব্ল্যাক ডায়মন্ডই সবচেয়ে বড়। এটি খুব শান্ত হলেও মাঝেমধ্যে অশান্ত হয়ে যায়। ষাঁড়টি বের করতে গেলে ১৫ থেকে ১৬ জন লোক লাগে। খাবার হিসেবে নিজেদের উৎপাদিত ঘাস, খৈল, ভুট্টার গুঁড়া, চিটেগুড়সহ লবণ মেশানো পানি দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ টাকার খাবার খায় গরুটি। একে নিয়ম করে প্রতিদিন তিনবার গোসল করানো হয়।

প্রায় দেড় বছর ষাঁড়টিকে এখানে সন্তানের যত্নে লালন-পালন করেছি। আমরা একে প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করেছি, পরিমিত খাবার দিয়েছি। বেশি খাবার দিলে এর ওজন ৬ থেকে ৭ মণ বেশি হতো। ওজন অতিরিক্ত হলে ঝিমায় যেত, কিন্তু ষাঁড়টি খুবই প্রাণবন্ত।’
খামার মালিক মিল্টন শিকদার

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যশোরের সাতমাইল হাট থেকে ষাঁড়টি কিনে আনেন খামারি মিল্টন শিকদার। তখন এর ওজন ছিল ৪০০ কেজির মতো। মিল্টন শিকদার বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর ষাঁড়টিকে এখানে সন্তানের যত্নে লালন-পালন করেছি। আমরা একে প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করেছি, পরিমিত খাবার দিয়েছি। বেশি খাবার দিলে এর ওজন ৬ থেকে ৭ মণ বেশি হতো। ওজন অতিরিক্ত হলে ঝিমায় যেত, কিন্তু ষাঁড়টি খুবই প্রাণবন্ত।’

খামারি যোগ করেন, ‘ষাঁড়টিকে আমরা হাটে তুলব না, খামার থেকেই বিক্রি করব। ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চাইছি। ইতিমধ্যে সাড়ে ছয় লাখ টাকা দাম উঠেছে।’ মিল্টনের খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা মোট ৫৪টি ষাঁড়ের অর্ধেকই বিক্রি হয়ে গেছে। বাকিগুলো এই সপ্তাহের মধ্যে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন খামারি।

আরও পড়ুন

ব্ল্যাক ডায়মন্ড ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিনই মিল্টনের খামারে ভিড় করেন আশপাশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন। সেখানে কথা হয় তারাপুর এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি আসছি গরুটা দেখার জন্য। গরুটা দেখতে অনেক সুন্দর, আমাদের এলাকায় এত বড় গরু আগে কেউ পালন করেননি। অনেক দূর থেকেও লোক একে দেখতে আসেন।’

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, উপজেলার তারাপুরে চিত্রা অ্যাগ্রো খামারটিতে অনেক বড় একটি গরু আছে। এত বড় ষাঁড় উপজেলায় আর নেই। শুরু থেকে খামারটির বিষয়ে খোঁজখবর রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে খামারিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়।

আরও পড়ুন