নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২২ ‘গায়েবি’ মামলা

নোয়াখালীতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের সাংবাদিক সম্মেলন। আজ দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো।

নোয়াখালীতে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও থানায় থানায় গায়েবি মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের এ সংগঠনটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনটির জেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুর রহমান। বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে নোয়াখালীর প্রতিটি উপজেলায় নির্বিচারে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপির ৩২১ জন এবং জামায়াতে ইসলামীর ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলার প্রায় সব থানায় গায়েবি মামলা করা হয়েছে। আগের দিন ধরে এনে পরে দিন মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ওই ঘটনায় মামলা করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।

আবদুর রহমান লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় ২২ মামলার তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। সব কটি মামলার এজাহারের ভাষা এক এবং বক্তব্যও প্রায় একই ধরনের। এতেই বোঝা যায়, ক্ষমতাসীন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে একের পর এক গায়েবি মামলা করছে পুলিশ। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ৬৪৮ জনকে। আর অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে এক হাজার ২৭১ জনকে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আদালতে মামলার হাজিরা দিতে এসেও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছেন। গতকাল বুধবার জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ারুল হক ওরফে কামালকে। এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল জেলা কৃষক দলের সভাপতি ফলেহ হোসেন ওরফে পলাশকে। ঘরে ঘরে তল্লাশি অভিযানের নামে জনমনে চরম ভীতি ও অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে পুলিশ। কোথায়ও কোথায়ও বাড়িতে হামলাও করা হচ্ছে। বিভিন্ন পরিবারের সদস্যদের চরম মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। কোনো সভ্য দেশে এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।

আবদুর রহমান বলেন, নোয়াখালী কৃতী সন্তান ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে ঢাকার ভাটারা থানায় একটি গাড়ি পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উক্ত মামলার এজাহারে তাঁর নামও নেই। কারও জবানবন্দিতেও তাঁর নাম আসেনি। অথচ তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। লিখিত বক্তব্যে অবিলম্বে মো. শাহজাহানের মুক্তি দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ বি এম জাকারিয়া, ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, সমন্বয়ক রবিউল হাসান পলাশ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব নুরুল আমিন, মাহমুদ হাসান সাকিল প্রমুখ।