পুনঃ ফলাফলে বগুড়ায় ‘ফেল করা’ ২৩ শিক্ষার্থীর ১৮ জন পাস, ১ জন পেল জিপিএ–৫
ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর যোগ না হওয়ায় বগুড়ার কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ পরীক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃপ্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রথম দফা ফলাফলে ফেল দেখানো ২৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ জনই পাস করেছে। একজন পেয়েছে জিপিএ–৫। ব্যবহারিক পরীক্ষার বাইরে অন্য বিষয়ে পাস নম্বর না পাওয়ায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি পাঁচজন। আজ মঙ্গলবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে ওই ২৩ শিক্ষার্থীর ফল পুনঃপ্রকাশ করা হয়।
ফলাফল নিয়ে এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রসচিবের গাফিলতিকে দায়ী করেছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের ভাষ্য, ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর যথাসময়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পাঠাননি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব। এতে এই ফল বিপর্যয় ঘটেছে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়ার কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ পরীক্ষার্থীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর কেন্দ্রসচিব ভুল করে শিক্ষা বোর্ডে পাঠাননি। কেন্দ্রসচিবের ভুলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয় ঘটে। বিষয়টি নজরে আসার পর কেন্দ্রসচিবকে বোর্ডে তলব করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়ার পর নিশ্চিত হয়, কেন্দ্রসচিবের ভুলে এমনটা ঘটেছে। এ কারণে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যোগ করে আজ পুনঃ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এই বিদ্যালয় থেকে ১০৮ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিল ২৩ জন। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল একই উপজেলার কাহালু তাইরুনেচ্ছা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষার ২৩ শিক্ষার্থীর কেউ পাস করেনি। পরে শিক্ষার্থীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাদের ফেল দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে।
প্রধান শিক্ষক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যোগ হয়নি। পরে তিনি এর সমাধান চেয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করেন।
কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এফ এম এ ছালাম বলেন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর বোর্ডে না পাঠানোর কারণে শুক্রবার প্রকাশিত ফলাফলে সবাই ফেল দেখানো হয়েছিল। কেন্দ্রসচিবের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছিল। দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ পুনরায় ফল প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ড। সেখানে ২৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন জিপিএ–৫, ৪ জন ‘এ’ গ্রেড এবং ১৩ জন ‘এ মাইনাস’ পেয়ে পাস করেছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে পাস করলেও অন্য বিষয়ে ফেল করায় পাঁচজন উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কাহালু তাইরুনেচ্ছা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব বেলাল উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।