পুলিশ-গ্রামবাসীর প্রচেষ্টায় ধরা পড়ল সাত ডাকাত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় গ্রামবাসী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় আটক দলনেতাসহ ডাকাত দলের সাত সদস্য। আজ দুপুরে বেগমগঞ্জ থানার প্রাঙ্গনেছবি প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রামবাসীর সহায়তায় দলনেতাসহ ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের লালপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক পাঁচ ভরি সোনার গয়নাসহ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এলাকা থেকে একজন ব্যবসায়ীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে বেগমগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য অবহিত করেন বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান। গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন দলনেতা নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচরের মো. কামাল (৪৩), লক্ষ্মীপুরের রামগতির সবুজ গ্রামের মো. শামীম (২২) ও মো. রায়হান (২৮), কমলনগরের মো. শরীফ (২৭), মো. সালাউদ্দিন (২৬), সদর থানার মো. হেলাল উদ্দিন (২১) ও ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুলকেইচ্যা গ্রামের মো. মিরাজ (২২)।

নাজমুল হাসান বলেন, গত ১৬ মে ও ২৯ জুন উপজেলার পৃথক দুটি স্থানে ডাকাতির দুটি ঘটনা ঘটে। তদন্ত করতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, এসব ঘটনার সঙ্গে আন্তজেলা ডাকাত দলের প্রধান কামালের সম্পৃক্ততা রয়েছে। গতকাল রাত দেড়টার দিকে মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তিকে একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি টহলরত পুলিশকে জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ও গ্রামবাসী ধাওয়া করে কামালসহ সাতজনকে আটক করেন। পরে তাঁদের দেহ তল্লাশি করে একটি বন্দুক, একটি পাইপগান, দুটি কিরিচ, তিনটি ছুরি, একটি গ্রিল কাটার ও একটি শাবল উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, থানায় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার সবাই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য বলে স্বীকার করেন। তাঁরা এ সময় লুণ্ঠিত সোনার গয়নার বিষয়েও তথ্য দেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুরের কমলগঞ্জ থেকে গয়না ব্যবসায়ী মো. হাসানকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার এক ডাকাত রায়হান চৌমুহনী এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘর রেকি করে সেগুলোর বিশদ তথ্য সংগ্রহ করে দলনেতা কামালকে জানাতেন। ডাকাতির সোনা তাঁরা লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থানার রিপন স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করতেন।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের আজ শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।