উপজেলা আওয়ামী লীগ ও আমানুর অনুসারীদের সংঘর্ষে ঘাটাইল রণক্ষেত্র

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। আজ সোমবার বিকেলে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানের (রানা) অনুসারীদের মধ্যে আজ সোমবার বিকেলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় উপজেলা সদর। এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গত ২৮ জানুয়ারি ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানের অনুসারীরা বেশির ভাগই কমিটি থেকে বাদ পড়েন। এ জন্য গতকাল রোববার তাঁর অনুসারীরা সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তাঁরা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করেন।

আজ সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। আমানুর রহমানের অনুসারীরাও একই সময় বিক্ষোভের কর্মসূচি দেন। দুপুরের পর থেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ে সমবেত হতে থাকেন। অপর দিকে আমানুরের অনুসারীরা কলেজ মোড় এলাকায় সমবেত হন। মাঝে পুলিশ অবস্থান নেয়। এ সময় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা আমানুর ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। আমানুর অনুসারীরা শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

বিকেল চারটার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। মিছিলটি বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি এলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে আমানুরের অনুসারীরাও বাসস্ট্যান্ডে ওই মিছিলের দিকে এগিয়ে যান। এ সময় উভর পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোড়া এবং ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পুলিশ লাঠিপেটা ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সংঘর্ষের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, আমানুরের অনুসারীদের হামলায় দেওপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর আলম খান ও দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম আহত হন। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুলতান উদ্দিন শাহীন, ঘাটাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য বজলুর রহমান ও যুবলীগ কর্মী শাহীন মিয়াকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমানুর রহমান খান উপজেলা সদরে ইউসিবি ব্যাংকের কাছে অবস্থান করে এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘাটাইলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন।

আমানুর রহমান খান অনুসারী অংশের নেতা তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জামায়াত–বিএনপি ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে শহিদুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করেছেন। সেখানে ত্যাগী নেতাদের পদবঞ্চিত করা হয়েছে। বঞ্চিত নেতারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। শহিদুল ইসলামের অনুসারীরা উসকানি দিয়ে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম সরকার জানান, টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।