চিনির ট্রাক থামাতে গিয়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ফটোসাংবাদিক নিহত

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র

নেত্রকোনায় চিনির ট্রাক আটকাতে গিয়ে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মোছা. সাহারা (৪৫) নামের এক নারী মারা গেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা আরও একজন আহত হন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শহরের রাজুরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সাহারা ঢাকার ডেমরার পশ্চিমবক্স সারুলিয়া এলাকার জাহের আলীর মেয়ে। তিনি দৈনিক আলোর জগৎ নামের একটি পত্রিকার স্টাফ ফটোসাংবাদিক ছিলেন। আহত নারী হলেন বারহাট্টা উপজেলার কাশতলা গ্রামের ফেরদৌসী আক্তার (৪৮)। ফেরদৌসীও আলোর জগৎ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন বলে তাঁর স্বজনেরা জানিয়েছেন। পুলিশ এ ঘটনায় সাহারা ও ফেরদৌসী যে মোটরসাইকেলে ছিলেন তার চালক জনি খানকে (২৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে কলমাকান্দা-ঠাকুরাকোনা সড়ক দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি আসছে, এমন খবর পেয়ে সাহারা ও ফেরদৌসী একটি মোটরসাইকেল নিয়ে দশধার এলাকায় একটি ট্রাক থামান। তাঁদের মোটরসাইকেলটি জনি চালাচ্ছিলেন। চিনির ট্রাকের সঙ্গে সঙ্গেও কয়েকজন লোক একটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন। ট্রাক থামিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে ট্রাকচালক ও মোটরসাইকেলে থাকা কয়েকজন চোরাকারবারির সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

পরে ট্রাকটি নিয়ে চালক শহরের রাজুরবাজার এলাকায় পৌঁছালে তাঁরা ট্রাকটি আবারও থামানোর চেষ্টা চালান। এ সময় ট্রাকের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলটি তাঁদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কের পাশে পড়ে গিয়ে সাহারা ও ফেরদৌসী মাথায় আঘাত পান। পরে তাঁদের উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহারাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফেরদৌসী ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর মোটরসাইকেলচালক জনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে।

আজ বুধবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় ফেরদৌসীর বাবা গোলাম রব্বানী, মামা ওমর ফারুকসহ কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ফেরদৌসী আক্তার দীর্ঘদিন ধরে আলোর জগৎ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন। চার দিন আগে তিনি (ফেরদৌসী) বারহাট্টার বাউসী বাজারে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তিন দিন আগে ঢাকা থেকে পত্রিকার ফটোসাংবাদিক সাহারা আসেন। তাঁরা একসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন করছিলেন। গতকাল রাতে সীমান্ত থেকে পাচার করা চিনির ট্রাক আটকাতে গেলে তাঁরা দুর্ঘটনার শিকার হন।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফুল হক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মোটরসাইকেলের চালক জনিকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি।