ঈদ কার্ডে ফিরে এল পুরোনো দিনের শৈশবের স্মৃতি

নতুন প্রজন্মের মধ্যে ঈদ কার্ডের অনুভূতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে শিশুদের নিয়ে ঈদ কার্ড তৈরির প্রতিযোগিতার আয়োজন করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আজ মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

‘জীবনে প্রথমবার ঈদ কার্ড তৈরির এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম। এটা আমার জন্য একদম নতুন অভিজ্ঞতা। এই স্মৃতি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ মাগুরায় ঈদ কার্ড তৈরির একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এ কথাগুলো জানাল শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মীম রহমান।

আজ শনিবার সকালে মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে মীম রহমানের মতো প্রায় ৭০ শিশু, কিশোর–কিশোরী ঈদ কার্ড তৈরির এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ‘মাগুরা আদর্শ বিতর্ক সংঘ’ ও ‘পরিবর্তনে আমরাই’ নামের দুটি সংগঠন এ আয়োজন করে। আয়োজকদের উদ্দেশ্য ছিল, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ঈদ কার্ডের অনুভূতি ছড়িয়ে দেওয়া। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মজুমদার।

শিশুরা রংতুলি ও কাগজ কাটার নানা রকম সরঞ্জাম নিয়ে ঈদ কার্ড তৈরিতে ব্যস্ত। আজ মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

সকালে মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিশুরা রংতুলি ও কাগজ কাটার নানা রকম সরঞ্জাম নিয়ে ঈদ কার্ড তৈরিতে ব্যস্ত। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া অনেক শিশুই প্রথমবারের মতো ঈদ কার্ড তৈরি করেছে। পাশাপাশি অভিভাবক ও অতিথিদের মধ্যে ঈদ কার্ড নিয়ে নিজেদের পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে দেখা গেছে।

প্রতিযোগিতায় শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকেরাও অংশ নেন। তাঁদের একজন লাবনী জামান বলেন, ‘ছোটবেলার এই স্মৃতি ভুলেই গিয়েছিলাম। এতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দ পেয়েছি। মনে হলো শৈশবে ফিরে গেছি। বয়স যে পঞ্চাশের কোঠায়, এখানে বসে তা ভুলেই গেছি।’

অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও অতিথিরা ঈদ কার্ড নিয়ে নিজেদের পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করের। আজ মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

আয়োজক সংগঠন ‘পরিবর্তনে আমরাই’-এর সভাপতি নাহিদুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মুঠোফোন ও ভার্চ্যুয়াল জগতে আমাদের ঈদের আনন্দ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা মা–বাবার শৈশবের স্মৃতি যেমন ফিরিয়ে আনতে চেয়েছি, তেমনি শিশুদের মধ্যে আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারাতে বসা ঈদ কার্ডের আনন্দটা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি।’

চারটি গ্রুপে প্রতিযোগীরা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় নিয়ে একেকটি কার্ড তৈরি করে। পরে তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ‘পরিবর্তনে আমরাই’ সংগঠনের উপদেষ্টা আইনজীবী শাখারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন। প্রতিযোগিতা শেষে শিশুদের নিজেদের আঁকা ঈদ কার্ডটি তাদের ফেরত দেওয়া হয় এবং এই কার্ড দিয়ে তাদের প্রিয়জনকে ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বলা হয়।