কাজে লাগছে না আইসিইউ সুবিধার অ্যাম্বুলেন্স

ভারত সরকারের উপহার দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সে গত ১১ মাসে কোনো রোগী বহন করা হয়নি। গত বুধবার চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের কার্যালয় চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে উপহার হিসেবে দেওয়া দেড় কোটি টাকা মূল্যের লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সটি কোনো কাজে লাগছে না। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) সুবিধাসংবলিত বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্সটি এক বছর ধরে সিভিল সার্জন কার্যালয় চত্বরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। এতে অ্যাম্বুলেন্সটির আয়ুষ্কাল নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের মার্চে রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন। তখন ১০৯টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওই বছরের ২৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। 

গত বুধবার গিয়ে দেখা যায়, সিভিল সার্জন কার্যালয় চত্বরে খোলা আকাশের নিচে অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে। বাংলাদেশ-ভারতের পতাকাসংবলিত অ্যাম্বুলেন্সটির গায়ে ধুলাবালুর আস্তর। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান সহকারী রোকেয়া বেগম বলেন, এক দিনের জন্যও এই অ্যাম্বুলেন্সে কোনো রোগী বহন করতে দেখেননি।

এ সম্পর্কে সিভিল সার্জন সাজ্জাৎ হাসান বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি সদর হাসপাতালের অনুকূলে বরাদ্দ। কী কারণে এ অ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহন করা হয় না, সেটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলতে পারবেন।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আতাউর রহমান মুন্সী বলেন, বিশেষায়িত এ অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের সময় রোগীর নিবিড় পরিচর্যার জন্য একজন চিকিৎসক ও নার্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ অ্যাম্বুলেন্সের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা চিকিৎসক ও নার্স রাখার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া এ অ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহন খুবই ব্যয়বহুল। ঢাকায় রোগী নিতে খরচ পড়বে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর হাসপাতালের নিজস্ব দুটি অ্যাম্বুলেন্স এবং এসব অ্যাম্বুলেন্সের বিপরীতে দুজন চালক আছেন। কিন্তু এ দুটি অ্যাম্বুলেন্স সর্বোচ্চ খুলনা অথবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত রোগী বহন করে। চুয়াডাঙ্গা থেকে কোনো রোগী ঢাকায় নিতে ভরসা বাড়তি খরচের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। 

বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গার সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী বলেন, এভাবে কোনো যানবাহন দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে ব্যাটারি বসে যায়। লুব্রিকেন্টের সার্কুলেশন না হওয়ায় মরিচা পড়ে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেবে।