কুমিল্লায় হত্যা মামলায় সাতজনের মৃত্যুদণ্ড, পাঁচজনের যাবজ্জীবন

হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রোববার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামের মো. রানা খান (২০) হত্যা মামলায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

একই সঙ্গে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন আদর্শ সদর উপজেলার চম্পকনগর পূর্বপাড়া এলাকার মো. জুয়েল মিয়া, চম্পকনগর গ্রামের মো. কাজল, মো. শিপন, মো. আলাউদ্দিন, মো. রিপন, বুড়িচং উপজেলার মো. শুভ ও দেবীদ্বার উপজেলার মো. মোর্শেদ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন আদর্শ সদর উপজেলার মো. বাদল, মো. ইকবাল, মো. জহিরুল ইসলাম ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মো. আনোয়ার ও মো. সোহেল। এ ছাড়া মামলা থেকে আদর্শ সদর উপজেলার চম্পকনগর এলাকার মো. সোহাগ, মো. শরিফ, মো. রনি ও মো. ইসহাক মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আদর্শ সদর উপজেলার চম্পকনগর পূর্বপাড়া এলাকার মো. জুয়েল মিয়া একই এলাকার মো. রানা খানকে বিলে মাছ ধরার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান। এরপর রানাকে হত্যা করে চম্পকনগর উত্তরণ হাউজিংয়ের দক্ষিণ পাশের বিলে ফেলে দেন। ১ মে সকালে রানা খানের লাশ খুঁজে পান স্বজনেরা।

এ ঘটনায় রানার বাবা জাহাঙ্গীর খান কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলায় জুয়েল, ইকবাল, জহির, সোহেল ও বাদল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০০৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক অমর চন্দ্র দাস ১৬ জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন আদালতে। দীর্ঘ শুনানির পর আজ দুপুরে আদালত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

রায় ঘোষণার সময় ৯ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আলাউদ্দিন ও রিপন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া জহির, আনোয়ার ও সোহেল। এ ছাড়া খালাস পাওয়া সোহাগ, শরিফ, রনি ও ইসহাক। মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জুয়েল মিয়া, শুভ, কাজল, শিপন ও মোর্শেদ এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাদল ও ইকবাল পলাতক।

মামলার বাদী জাহাঙ্গীর খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। এখন রায় কার্যকর করতে হবে। ১৮ বছর ধরে মামলা চালিয়ে আজ ন্যায়বিচার পেয়ে স্বস্তি পেয়েছি।’ তবে মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম ফারুক ও মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।