এবার পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে রাবির চারুকলার আরেক দল শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ তোলার প্রতিবাদে চারুকলা অনুষদের একদল শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি। রোববার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের কারুশিল্প ডিসিপ্লিনের মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ তোলার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আরেক দল শিক্ষার্থী। আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা ‘নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা চাই’, ‘মিথ্যা সব উক্তি, প্রশাসনের সহানুভূতি’, ‘প্রশাসন জবাব চাই’, ‘পরীক্ষার দিন পরীক্ষা স্থগিত মানি না!’ , ‘শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ মানি না’, ‘উপস্থিতির সঠিক গণনা চাই’ ও ‘প্রমাণবিহীন অভিযোগ মানি না’ লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

এর আগে কারুশিল্প ডিসিপ্লিনের ১২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জন অভিযোগ করেন, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনির উদ্দিন আহম্মেদ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ উপস্থিতি কম দেখিয়ে তাঁদের ডিজকলেজিয়েট করেছেন। এর প্রতিবাদে তাঁরা গত বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন ও সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চারুকলা অনুষদের ডিন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

আট ডিজকলেজিয়েট শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডিসিপ্লিনে চারজন শিক্ষক থাকার পরও সহকারী অধ্যাপক মনির উদ্দিন আহম্মেদ ছয়টি ব্যবহারিক কোর্স নিয়ে থাকেন। সকাল নয়টার মধ্যে ক্লাসে আসতে বললেও শিক্ষক নিজে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টার দিকে আসতেন। এরপর বিভাগের কনিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের থেকে শুনে ওই শিক্ষক ক্লাসের উপস্থিতি দিতেন। ফলে নির্ধারিত সময়ে ও নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা ডিজকলেজিয়েট হয়েছেন।

এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এবার চারজন পরীক্ষার্থী এবং ওই ডিসিপ্লিনের অন্যান্য বর্ষের প্রায় ২০ শিক্ষার্থী অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া পরীক্ষার্থী মাহরিন সাদিয়া বলেন, ‘আট শিক্ষার্থীকে বারবার বলার পরও তারা শুরু থেকে ক্লাসে আসেনি। শিক্ষকেরা নিয়মিতই ক্লাস নিয়েছেন। প্রতি মাসের শেষে শিক্ষার্থীদের থেকে স্বাক্ষরও নিয়েছেন। করোনার কারণে ইতিমধ্যে আমরা দুই বছর পিছিয়ে পড়েছি। তাদের সঙ্গে আবারও ক্লাস করতে গেলে আমাদের আরও ছয় মাস লাগবে। আট শিক্ষার্থী একেকজন একেকটা কোর্সে উপস্থিত নেই। এ ছাড়া আমাদের একেকটা কোর্স ব্যয়বহুল। এখন আর পরীক্ষা পেছানোর পরিস্থিতি নেই।’

শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ একাডেমিক কমিটির ওপর নির্ভর করে। আমরা তাদের বলেছি, প্রয়োজনে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।’

চারুকলা অনুষদের ডিন (অধিকর্তা) অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আছে। সেই সিদ্ধান্তই এখনো বহাল আছে।’