কুড়িগ্রামে পাঁচ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি বিক্রি

কুড়িগ্রামে পাঁচ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি বিক্রি করেছে ‘ফুল’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বুধবার বিকেলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের সামনেছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় অসচ্ছল মানুষদের মধ্যে পাঁচ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজি বিক্রি করছে ‘ফাইট আনটিল লাইট’ (ফুল) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক সরকার।

প্রথম দিনে ঘোগাদহ ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ প্রায় ১০টি গ্রামের দেড় শতাধিক অসচ্ছল মানুষের কাছে এক কেজি শিম, এক কেজি বেগুন, দুটি ফুলকপি, এক কেজি মুলা, তিন আঁটি লালশাক, এক আঁটি ধনেপাতা এবং একটি করে ডিম বিক্রি করা হয়। পুরো প্যাকেজের বাজারমূল্য ২০০ টাকার বেশি হলেও দরিদ্র মানুষেরা এটি পেয়েছেন মাত্র ৫ টাকায়।

সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের জানিয়েছেন, জেলার সদর, ফুলবাড়ী ও রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে এই পাঁচ টাকার সবজি বিক্রির কার্যক্রম চালানো হবে।

পাঁচ টাকার বাজারে সবজি কিনতে আসা দুবাআছরা গ্রামের বাসিন্দা পপি রানী বলেন, দিন দিন দ্রব্যমূল্য গরিব মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফুলের আয়োজনে পাঁচ টাকার বাজার থেকে তিনি সাত প্রকার সবজি ও ডিম মাত্র পাঁচ টাকায় কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা রিলিফ দেয় নাই, তারা কম দামে বিক্রি করল আর হামরা কিনি নিলাম। পাঁচ টাকার বাজারে ব্যাগ ভরা সবজি পাইছি। হামার ছোট সংসারে এই সবজি দিয়ে সাত দিন চলি যাইবে।’

ঘোগাদহ গ্রামের সোমবারী রানী বলেন, ‘হামার স্বামীর কোনো আবাদি জমাজমি নাই। হাতের কামাই দিয়ে কোনোরকমে চাল কিনে ভাত খাই। বাজারে সবজির দাম চড়া। ভালোমন্দ সবজি, মাছ, ডিম খামো, তার সামর্থ্য নাই। আজ পাঁচ টাকা দিয়ে একটা ডিম, শিম এক কেজি, মুলা, বেগুন, ধনেপাতা ও লালশাক কিনেছি। আমার ছাওয়াটা ডিম পায়া খুব খুশি হইছে।’

দিন দিন দ্রব্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে মন্তব্য করে ঘোগাদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক সরকার বলেন, আজ ফুল সংগঠনের মাধ্যমে দেড় শ পরিবার কাঁচাবাজার পাওয়ায় আগামী সাত দিন তাদের আর সবজির বাজারে যেতে হবে না। ফুল সংগঠনের এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এই জনপ্রতিনিধি।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) সংগঠন গরিব মানুষের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছে। আমরা ত্রাণপ্রথা থেকে বেরিয়ে এসে সম্মানের সঙ্গে বাঁচবার জন্য মানুষের কাছ থেকে পাঁচ টাকা করে নিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের সংগঠন নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী ও রাজারহাট উপজেলায় গরিব ও অসহায় মানুষদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে।’