১২ ঘণ্টার ব্যবধানে উখিয়া আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা নেতা খুন

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ায় গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীরা। জাফর আহমদ (৪২) নামের নিহত ওই নেতা রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্য। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাকিমপাড়া (ক্যাম্প-২০) আশ্রয়শিবিরের এস-৪ বি ব্লকের কাঁটাতারের কাছে একটি পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

জাফর আহমদ পাশের মধুরছড়া (ক্যাম্প-৪) আশ্রয়শিবিরের জি-৯ ব্লকের বাসিন্দা রঞ্জু মিয়ার ছেলে। এর আগে গতকাল ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পাশের বালুখালী (ক্যাম্প-১৮) আশ্রয়শিবিরে আরসা সন্ত্রাসীরা জবাই করে হত্যা করে আরএসও সদস্য নুর কামালকে (২৯)। তিনি তাজনিমার ঘোনা আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৯) ডি-১৩ ব্লকের নুর সালামের ছেলে। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশ্রয়শিবিরে শরণার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। বর্তমানে এই আশ্রয়শিবিরে প্রায় ৫৮ হাজার রোহিঙ্গার বসতি রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, আশ্রয়শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরসা ও আরএসও সন্ত্রাসীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যার দিকে আরসার ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী জাফর আহমদকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে। গলায় গুলি লাগার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলে আরএসওর সক্রিয় সদস্য জাফরের মৃত্যু হয়। রাত নয়টার দিকে উখিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশ্রয়শিবিরের একজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, নিহত জাফর আহমদ দুই বছর ধরে আরসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছয় থেকে সাত মাস আগে তিনি আরসা ছেড়ে আরএসওতে যোগ দেন। সম্প্রতি আরসার সন্ত্রাসীদের তৎপরতা সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছিলেন জাফর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরসা সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যা করে।