লিবিয়ায় প্রবাসীকে অপহরণ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ পরিবারের

যশোর জেলার মানচিত্র

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের প্রবাসী জিয়াউর রহমানকে (৩৫) লিবিয়ায় অপহরণ ও নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন জিয়াউর রহমানের ভাই বেলাল হোসেন। তাঁদের বাড়ি কেশবপুর উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দালালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছে বলেও অভিযোগ করে পরিবারটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবদুল গফুর সরদারের ছেলে দালাল সোহাগ হোসেন চার বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে তাঁর ভাই জিয়াউর রহমানকে লিবিয়ায় পাঠান। বর্তমানে লিবিয়ায় আদম ব্যাপারী খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধানে আছেন তাঁর ভাই। তাঁর ভাইয়ের দুই বছরের উপার্জনের টাকা আবদুল আজিজ ছেলে আরাফাত হোসেনের মাধ্যমে তাঁদের বাড়িতে পাঠালেও বাকি দুই বছরের টাকা দেওয়া হয়নি। ওই টাকা আবদুল আজিজের কাছে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তাঁর ভাইকে অপহরণ করে অন্যত্র নিয়ে যান। এরপর পাসপোর্ট, ভিসা ও নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার লিরা ছিনিয়ে নেন। সেখানে তাঁকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও তাঁদের মুঠোফোনে পাঠান এবং ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে যশোরের জেলা প্রশাসক এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে গত ২৩ মে আবেদন দেন তাঁরা। এরপর সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে সোহাগ সরদার ও ডুমুরিয়া উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে আরাফাত হোসেনকে অভিযুক্ত করে যশোর আদালতে অভিযোগ দেন বিল্লাল হোসেন। এর পর থেকে লিবিয়ায় অবস্থানরত তাঁর ভাইকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণসহ দালাল ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন বেলাল হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেলাল হোসেনের ভগ্নিপতি হাবিবুল্লাহ ও উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।

এ বিষয়ে কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস প্রথম আলোকে বলেন, যশোরের আমলি আদালতের নির্দেশে কেশবপুর থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়। মামলায় সোহাগ সরদার ও আরাফাত হোসেনকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁদের যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়।