চট্টগ্রাম নগরে ৭ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৬৬২ জনের

চট্টগ্রাম নগর পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫ প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠান। আজ নগরের পুলিশ লাইনের সম্মেলন কক্ষেছবি: পুলিশের সৌজন্যে

চট্টগ্রাম নগরে সাত বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৬৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পথচারী নিহত হয়েছেন ৩৬৩ জন, যা মোট নিহতের অর্ধেকের বেশি। পথচারীদের পর সবচেয়ে ঝুঁকিতে ছিলেন দুই ও তিন চাকার যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে এই দুই যানবাহন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৯৫ জন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) যৌথভাবে প্রকাশিত চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২৫-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। এটি চট্টগ্রামে পুলিশি তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত তৃতীয় সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন। আজ বুধবার নগরের পুলিশ লাইনের সম্মেলনকক্ষে এ প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে নগরের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান।

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) কর্মসূচির আওতায় এ প্রতিবেদন প্রস্তুত ও প্রকাশে সহায়তা করেছে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংস্থা ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হার ২৯ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনটিতে ২০টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বড়পোল মোড়, অলংকার মোড়, সিইপিজেড গেট, সিটি গেট, নিউমার্কেট বাসস্টপ, কালামিয়া বাজার বাসস্টপ এবং সাগরিকা গোলচত্বর। সুপারিশে বলা হয়, এসব স্থানে দ্রুত বিজ্ঞানভিত্তিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটি চিহ্নিত করে পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে সুপারিশে বলা হয়েছে, তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শহরের সড়কে প্রাণহানি প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশেষ করে পথচারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফুটপাত প্রশস্তকরণ, উঁচু জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ, নিরবচ্ছিন্ন ফুটপাত নিশ্চিতকরণ, স্পিড হাম্প স্থাপন এবং পথচারী দ্বীপ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমাতে মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কো–অর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান। মূল তথ্য উপস্থাপন করেন বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের সার্ভেইলেন্স কো–অর্ডিনেটর কাজী সাইফুন নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে বিআইজিআরএস এনফোর্সমেন্ট কো–অর্ডিনেটর কাজী হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, গবেষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।