ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশি কিশোরীর বাল্যবিবাহ পণ্ড, জরিমানা
বাজানো হচ্ছিল বিয়ের বাদ্য। ১৫ বছরের কিশোরীকে কনে সাজিয়ে বসানো হয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে। বর ভারতীয় নাগরিক। একটু পরই মালাবদল। এর মধ্যেই পুলিশ নিয়ে হাজির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পণ্ড করে দেন বাল্যবিবাহের আয়োজন। বিয়ের এ আয়োজন করায় বরের এক স্বজনকে জরিমানা করা হয় ৪০ হাজার টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন।
বরের নাম সুশান্ত নাথ (২৯)। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরের বাসিন্দা। জরিমানা করা হয়েছে দীপালি রানী নাথকে। তিনি সম্পর্কে বরের খালা। নিজের বাড়িতেই বাংলাদেশি কিশোরীর সঙ্গে সুশান্তের বিয়ের আয়োজন করেন তিনি।
বর সুশান্ত নাথ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা মাসিকে বাংলাদেশে আমার জন্য কনের সন্ধান করতে বলেছিলেন। এরপর মাসি বিয়ের আয়োজন করেছেন। বিয়ের উদ্দেশ্যে ১৪ এপ্রিল আমি ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসেছি। যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছে সে প্রাপ্তবয়স্ক নয়, সেটি আমি জানতাম না। বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত।’
ওই কিশোরীর বাবা লক্ষণ চন্দ্র নাথ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চায়ের দোকানের কর্মচারী। তাঁর কোনো ছেলে নেই। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে আগে বিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অর্থকষ্টে রয়েছেন। তাই বিনা খরচে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসায় রাজি হয়েছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরী একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বিয়ের আয়োজন করায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭–এর ৮ ধারা অনুযায়ী দীপালি রানী নাথকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ওই কিশোরীকে বিয়ে দিতে অভিভাবকদের নিষেধ করেছেন তিনি।