পা কেটে নেওয়া যুবকের মৃত্যু, হাত কাটা আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক যুবকের হাতের কবজি ও আরেক যুবকের পা কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন পা কেটে নেওয়া যুবক ফজলে হাসান (৩০)। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের টুটিয়াখালী পাড়ায় হামলার ঘটনা ঘটে।

একই হামলার ঘটনায় মো. ছোটন (৩৫) নামে একজনের বাম হাতের কবজি কেটে নেওয়া হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়রা লোকজন বলেন, গতকাল রাতে বদরখালী জেটিঘাট স্টেশন থেকে মাতারবাড়ি পাড়ার জিদান আল নাহিয়ানের মোটরসাইকেলে চড়ে টুটিয়াখালী পাড়ায় ফিরছিলেন ছোটন ও ফজলে হাসান। টুটিয়াখালী পাড়ায় পৌঁছালে মসজিদের পাশের একটি দোকান থেকে তাঁদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছোড়া হয়। এতে জিদানের হাঁটুতে গুলি লাগে। মোটরসাইকেল থামিয়ে কারা গুলি করেছে, তা দেখতে যান ছোটন ও ফজলে। এ সময় তাঁদের ওপর হামলা করে দুজনের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে ছোটনের বাম হাতের কবজি ও ফজলে হাসানের ডান পা কেটে মোটরসাইকেলের পাশে রেখে দিয়ে হামলাকারীরা চলে যান।

পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আজ শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে ফজলে হাসান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ফজলে হাসান বদরখালী ইউনিয়নের মগনামাপাড়ার ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। মো. ছোটন বদরখালী ইউনিয়নের টুটিয়াখালী পাড়ার আবদুল জলিলের ছেলে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র ও পুলিশ বলছে, টুটিয়াখালী পাড়ায় দুটি বাহিনীর আধিপত্য আছে। তার মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ করেন মো. ছোটন। আরেকটি নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় নজরুল ইসলাম নামের একজন। ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি জমিসংক্রান্ত বিরোধের সালিসে খুন হন টুটিয়াখালী পাড়ার জয়নাল আবেদীন। সেই মামলার ১ নম্বর আসামি ছোটন। কয়েক দিন আগে ওই মামলায় জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হন তিনি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ফজলে হাসান মারা গেছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। অপর আহত ছোটনের বাম হাতের বিচ্ছিন্ন কবজি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার দুইটি পক্ষই অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।