‘না অইলে আমরা নির্বাচন থাকি সরি যাইমু, মন্ত্রী মহোদয় বিনা ভোটে পাস’

পরিবেশমন্ত্রীর আসনে নির্বাচনী পরিবেশ খারাপ হলে ‘বয়কটের ওয়াদা’ করছেন তিন প্রার্থী। গতকাল রোববার মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায়
ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে নির্বাচনের পরিবেশ খারাপ দেখলে ‘বয়কটের ওয়াদা’ করেছেন তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। গতকাল রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কার্যালয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাঁরা হাতে হাত রেখে এ ‘ওয়াদা’ করেন, যার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই তিন প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দলের জুড়ী উপজেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন ওরফে মঞ্জু এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আনজুমানে আল-ইসলাহর জুড়ী উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ময়নুল ইসলাম।

এ আসনে ওই তিনজনসহ চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। চতুর্থজন হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। যাচাই–বাছাইয়ে এই আসনে ফারুক আহমদ নামে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

আরও পড়ুন

সংসদ সদস্য প্রার্থী আহমেদ রিয়াজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আনোয়ার হোসেন ও ময়নুল ইসলামকে দুই পাশে রেখে রিয়াজ মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। রিয়াজ প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘দেশ-বিদেশে যাঁরা ভোটার আছেন শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের মনোনয়নপত্র বৈধ হইছে। ভোট আপনারা দিতা। আমরা তিনজনে মাননীয় মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন (পরিবেশমন্ত্রী) সাহেবের লগে নির্বাচন করিয়ার।’

একপর্যায়ে আহমেদ রিয়াজ ‘আমরা যদি মনে করি, ওয়াদা করিয়ার, ওয়াদা’ বলে বাকি দুজনের হাত তাঁর হাতের ওপর রেখে বলেন, ‘আমরা যদি মনে করি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, সব ধরনের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাইব, পুলিশ যদি বিএনপি-জামায়াতের ভোটারদের কোদায় (হয়রানি) না, ভোটকেন্দ্রে হামলা হইত না, ভোট ডাকাতি হইত না, তাহলে নির্বাচন করমু। আর না অইলে ১৭ তারিখ (১৭ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন) আমরা নির্বাচন থাকি সরি যাইমু। মন্ত্রী মহোদয় বিনা ভোটে পাস।’ আহমেদ রিয়াজের পোস্ট করা ওই ভিডিওটি পরে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

ওয়াদার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিবেশ না থাকলে অংশগ্রহণ করে লাভ কী? এ ব্যাপারে আমি একমত।’ আরেক প্রার্থী ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ছওয়াবের হবে না।’

আরও পড়ুন

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ঊর্মি বিনতে সালাম আজ সোমবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, যাচাই-বাছাইয়ে মৌলভীবাজার-১ আসনে চারজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।