প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিসকক্ষে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি গঠন

নওগাঁ জেলার মানচিত্র

নওগাঁর বদলগাছিতে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিসকক্ষে নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ তদন্তে গতকাল বুধবার তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত মঙ্গলবার নওগাঁ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের অনুলিপি বদলগাছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিও ক্লিপ দেখে মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক ও তাঁর নারী সহকর্মীকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তাঁরা দুজন পৃথকভাবে আমার সঙ্গে দেখা করে ভিডিওগুলোর দৃশ্য সত্য নয় বলে দাবি করেছেন। একটি মহল তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে তাঁরা আমাকে বলেছেন।’

ইউএনও আলপনা ইয়াসমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিও ক্লিপ পেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছি।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াসিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান শিক্ষক ও তাঁর নারী সহকর্মীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনা তদন্তে গতকাল তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুনকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন—উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার অঞ্জন কুমার কুণ্ড ও ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি সম্প্রতি অন্য শিক্ষক-কর্মচারীরা জানতে পারেন, তবে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। ঈদের পর অফিসকক্ষে দুজনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি ধরতে অফিসকক্ষে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী। সেই ক্যামেরার ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের যথাযথ ব্যবস্থা চাই। ঈদের ছুটির পর বিদ্যালয় খোলা হলে আমরা মানববন্ধন করব।’