সাভারে দাফনের ২১ দিন পর কবর থেকে তোলা হলো ব্যবসায়ীর মরদেহ
ঢাকার সাভার পৌরসভা এলাকায় দাফনের ২১ দিন পর কবর থেকে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ তোলা হয়েছে। আদালতে মৃত ব্যক্তির ছোট ভাইয়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে কবর থেকে মরদেহটি তোলা হয়েছে।
নিহত জামাল গোলদার (৫৩) সাভারের দক্ষিণ রাজাশন এলাকার মৃত ফরিদ গোলদারের ছেলে। তাঁর একটি গরুর খামার ছিল। পাশাপাশি তেল-মবিল ক্রয়-বিক্রয় করতেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে ফুরকান নামের এক ব্যক্তির কল পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান জামাল। দিবাগত রাত ১২টার দিকে মনা নামের আরেক ব্যক্তি জামালের ছোট ভাই ইমরান গোলদারকে মুঠোফোনে জামাল অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানান।
পরে ফুরকানের বাসায় গিয়ে জামালকে অচেতন অবস্থায় দেখতে ইমরান। পরে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ফুরকান ও তাঁর লোকজন জামালকে সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জামালকে মৃত ঘোষণা করেন। পর দিন জামালের মরদেহ দাফন করা হয়। তবে এর আগেই বাসায় তালা ঝুলিয়ে ফুরকান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ হয় জামালের পরিবারের সদস্যদের।
পরে ১৮ সেপ্টেম্বর ফোরকানসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন ইমরান গোলদার। মামলার অন্য আসামিরা হলেন লোকমান হাকিম (৫১), গোফরান হাকিম (৪৫) ও কাঞ্চন সিয়ালি ওরফে দ্বীন মোহাম্মদ (৫৫)।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার ঘাসমহলের আল বেদা বাইতুল নুর জামে মসজিদ কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশে জামাল গোলদারের মরদেহ তোলা হয়। এ সময় সাভার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাসেল ইসলাম নূরসহ সাভার মডেল থানার পুলিশের কয়েকজন সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মামলার বাদী ও নিহত ব্যক্তির ছোটো ভাই ইমরান গোলদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফুরকান আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে লোকমান, গোফরান, কাঞ্চন সিয়ালিদের সহযোগিতায় হত্যা করেছেন। ফুরকানের বাসা আমাদের বাসার খুবই কাছাকাছি। ঘটনার রাত থেকে ফুরকানের বাসায় তালাবদ্ধ দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে ফুরকানসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেছি। পরে আদালত গত বৃহস্পতিবার মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে।’
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আবদুল্লা বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে সাভার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়েছে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।