সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি তিন প্রহরী, ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজার জেলার মানচিত্র

কক্সবাজারের টেকনাফে বন বিভাগের পাহারা দলের নিখোঁজ তিন সদস্যের পরিবারের কাছে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা করে ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে এ মুক্তিপণ দাবি করা হয়। গতকাল শুক্রবার পাহাড়ের সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের সন্ত্রাসীরা তাঁদের অপহরণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অপহৃত তিনজন হলেন হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে মোহাম্মদ শাকের (২০), বকসু মিয়ার ছেলে আবদুর রহমান (৪২) ও আবদুস শুক্কুরের ছেলে আবদুর রহিম (৪৬)।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, গতকাল সকালে ইউনিয়নের মোচনী বিটের নেচারপার্ক বনে পাহারা দেওয়ার সময় বেসরকারি সংস্থা নিসর্গের অধীন কর্মরত তিন পাহারাদারকে অপহরণ করা হয়। খবর পেয়ে বন পাহারা দলের অর্ধশতাধিক সদস্য পাহাড়ে অভিযান চালান। আজ সকালে শাকেরের মা আম্বিয়া খাতুন, রহিমের স্ত্রী রাবিয়া বেগম এবং আবদুর রহমানের স্ত্রীর মুঠোফোনে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

তিনজনকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চান দাবি করে পরিবারের সদস্যরা বলেন, টাকা না পেলে তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। এ সময় পরিবারকে মুঠোফোনে তাঁদের চিৎকার শুনিয়ে ভয় দেখান অপহরণকারীরা।

গতকাল রাতে টেকনাফ সদরের বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম সরকার বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও নেচারপার্ক মোচনী বন পাহারা দলের সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান বলেন, টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার মোচনী বিটের আওতাধীন বেসরকারি সংস্থা নিসর্গের অধীন বন পাহারা দলের পিসিজি ৩৭ সদস্য রয়েছেন। এ পাহারা দলের সদস্যরা দৈনিক সকাল ও বিকেল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বনে পাহারা দেন।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, তিনজন বন প্রহরীর উদ্ধারের জন্য পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

গত সাড়ে ৮ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ৪৪ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে।