জাগীর সেতুর দুই প্রান্তে গাড়ির দীর্ঘ জট, যাত্রীদের ভোগান্তি

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাগীর সেতুর সংস্কারকাজ চলছে। এতে সেতুর দুই প্রান্তে যাত্রী ও যানবাহনগুলোকে আটকে থাকতে হচ্ছে। আজ রোববার সকালে সেতুর পশ্চিম প্রান্তেছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাগীর সেতুতে সংস্কারকাজ চলায় সেতুর দুই প্রান্তে আজ রোববারও যানজট তৈরি হয়েছে। সেতু পারাপারের অপেক্ষায় দুই প্রান্তে প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও গাড়ির চালক-সহকারীরা।

গত বুধবার থেকে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুর ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ সংযোজনকাজ চলছে। এতে সেতুটির এক লেন বন্ধ থাকায় অপর লেনে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সেতুর উভয় প্রান্তে যানবাহন আটকে থাকছে।

আরও পড়ুন

আজ রোববার সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত সেতু এলাকায় অবস্থান করে দেখা গেছে, সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করছে। দুই লেনের সেতুটির এক লেনে কাজ চলায় এক পাশ দিয়ে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। এক পাশের গাড়ি ছাড়লে অন্য পাশে বন্ধ রাখা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, সেতুর বিভিন্ন অংশের সংযোগস্থলে ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ স্টিলের পাতগুলো বেঁকে গেছে। সেতুটিতে মোট ১২টি এক্সপানশন জয়েন্ট আছে। এর ফলে সংযোগস্থলের তিন থেকে চার ইঞ্চি অংশ পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি যাতায়াতের সময় শব্দ হওয়া এবং গাড়িতে বেশ ঝাঁকুনি লাগে। সে জন্য এসব এক্সপানশন জয়েন্টে আগের পাতগুলো সরিয়ে নতুন করে স্টিলের পাত বসানো হচ্ছে। গত বুধবার থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে, যা চলবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত।

সেতু সংস্কারের কাজ করা শ্রমিকেরা বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত ১২টি এক্সপানশন জয়েন্টের মধ্যে ইতিমধ্যে ৯টির এক লেনের (অর্ধেক) কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ শেষে করে অপর লেনের কাজ শুরু করা হবে। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে।

আজ সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সেলফি পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন জেলা শহরের সেওতা এলাকার মোটরসাইকেলে পার্টসের ব্যবসায়ী রানা মিয়া। জাগীর সেতুর উত্তর প্রান্তে দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিলেন তিনি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘দোকানে মালামাল কমে গেছে। সামনে ঈদ। ঢাকায় যাচ্ছি মোটরসাইকেলের পার্টস আনতে। কিন্তু এখানে এসে যানজটের কারণে প্রায় ২০ মিনিট ধরে আটকে আছি।’

সওজের মানিকগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল কাদের জিলানী বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো সেতুটির এক্সপানশন জয়েন্টগুলো ফাঁকা হওয়ায় সেখান দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় শব্দের পাশাপাশি ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহনের চাকার সমস্যাও হয়। সংস্কারকাজ চলায় সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এ কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরও তিনটি সেতুর ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ সংস্কার করা হবে। সেগুলোর কাজ ঈদের পর শুরু করা হবে।