চুরি করা শার্ট পরে টিকটক করে ধরা

সীতাকুণ্ড থানায় গ্রেপ্তার শাহিন আলম (বাঁয়ে) ও রাকিব হাসান
ছবি: সংগৃহীত

চুরি করা শার্ট পরে টিকটক ভিডিও করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ভিডিও দেখে ক্ষেপে গেলেন শার্টের আসল মালিক। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে টিকটক ভিডিও করা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই তরুণকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার তরুণেরা হলেন শাহিন আলম (১৯) ও রাকিব হাসান (১৯)। তাঁদের বাড়ি উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে আজ তাঁদের আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি চুরির মামলা করেন। শিরিনা আক্তারের বাড়ি উত্তর-পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে। তিনি ক্ষুদ্র পোশাক ব্যবসায়ী।

শিরিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঢাকা থেকে বিভিন্ন রকমের শাড়ি ও নারী-পুরুষের গার্মেন্টস পণ্য কিনে এনে বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করেন। গত মাসে তাঁর মা অসুস্থ হয়ে রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। মাকে দেখতে তিনি গত ১ জুলাই ঢাকা যান। এ সময় তাঁর দুই সন্তানও তাঁর সঙ্গে যায়। ফলে বাড়িতে কেউ ছিল না। এরপর তিনি ২৩ জুলাই বাড়ি ফিরে এসে দেখেন, তাঁর ঘরের আসবাব অগোছালো ও এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। ঘরে টেলিভিশনটি নেই এবং স্বর্ণালংকার রাখা আলমারি ভাঙা। ঘরের আলমারিতে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। সেগুলো নেই এবং বিক্রির জন্য রাখা শার্টের আলমারি ভেঙে আটটি শার্ট নিয়ে গেছে চোরেরা। এ ঘটনায় তিনি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন।

ক্ষুদ্র পোশাক ব্যবসায়ী শিরিনা আক্তারের বাড়ি থেকে টেলিভিশন, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণালংকার ও বিক্রির জন্য রাখা আটটি শার্ট নিয়ে যায় চোরেরা।

শিরিনা আক্তার বলেন, এরপর এক সপ্তাহ কেটে যায়। হঠাৎ তাঁর এক আত্মীয় দেখতে পান, তাঁর ঘর থেকে চুরি হওয়া একটি শার্ট পরে শাহিন নামের এক তরুণ টিকটক আইডি ‘শাহিনুল্লাহ ৫’ থেকে টিকটক ভিডিও করে ছেড়েছেন। ঘটনা জানার পর তিনি ভিডিওটি দেখেন। একই রকম শার্ট তাঁর কাছে আরও ছিল। তিনি ভিডিওর শার্টের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখেন। এরপর তিনি পুলিশকে খবর দেন।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার গভীর রাতে তাঁরা টিকটকার শাহিনকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি রাকিবের নাম বলেন। এরপর রাকিবকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে শাহিনের ঘর থেকে তিনটি এবং রাকিবের ঘর থেকে দুটি চুরি করা নতুন শার্ট উদ্ধার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে শিরিনার ঘর থেকে চুরি করা টেলিভিশন আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন বলে স্বীকার করেন শাহিন। পড়ে সেই টেলিভিশন উদ্ধার করা হয়। কিন্তু এখনো তাঁরা স্বর্ণালংকার কোথায় বিক্রি করেছেন, সে বিষয়টি স্বীকার করেননি। ফলে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে। আজ ওই দুই তরুণকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।