কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা শিক্ষক সমিতির

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম আলোর ফাইল ছবি

সাত দফা দাবি না মানায় ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তবে কোনো বিভাগে চূড়ান্ত সেমিস্টার পরীক্ষা থাকলে, তা চলবে। ঈদের ছুটির পর শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা ডেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেবে।

আজ সোমবার বিকেলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শিক্ষকদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে—১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করে ঘটনার তদন্ত করা এবং হামলায় মদদ দেওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে অপসারণ, ঢাকার অতিথিশালা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, গ্রেড–১ ও ২-তে আবেদন করা শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ এবং ইতিমধ্যে বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের প্রত্যাহার করা, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি স্থায়ীকরণে আইনবহির্ভূত শর্তারোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্নের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা, ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় বিতর্কিত শিক্ষা ছুটি নীতিমালা প্রত্যাহার করে আগের নীতিমালা বহাল এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।

শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কয়েক দিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। উপাচার্য শিক্ষকদের কোনো দাবিই মানছেন না। এমনকি শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠকেও বসছেন না। এ অবস্থায় ১৩ ও ১৪  মার্চ দুই দিনের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে। পরে শিক্ষক সমিতি সাত দফা দাবি ১৮ মার্চের মধ্যে না মানলে ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত টানা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করবে বলে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এ সময়েও উপাচার্য শিক্ষকদের ডাকেননি, দাবিও মানেননি।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাছানের নেতৃত্বে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে দেখা করতে যান। এ বিষয়ে সন্তোষজনক আলোচনা না হওয়ায় শিক্ষক সমিতির নেতারা শিক্ষক লাউঞ্জে এসে পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে এ ক্লাস বর্জন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে আজ একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাছান বলেন, ‘উপাচার্যের একগুঁয়েমি মনোভাব সংকট আরও বাড়িয়েছে। শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি উনাকে মানতে হবে। না মানলে সরকার এখানে হস্তক্ষেপ করবে।’

সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, ‘দাবি দাওয়া নিয়ে উপাচার্যের মনোভাব খুবই খারাপ। তিনি কোনো কথা শুনতে চান না। অনিয়মের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন। আমরা বাধ্য হয়েছি ক্লাস বর্জন করতে। ঈদের পর দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’