পাকুন্দিয়ায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, আসামি দেড় হাজার

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পাকুন্দিয়া পৌর সদরের সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জালাল উদ্দিনসহ ১৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার রাতে পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন। এরই মধ্যে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জাহান বলেন, শনিবার বিএনপির সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি ছিল না। উপজেলার সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা থেকে মিছিল নিয়ে তারা পৌর বাজারের দিকে আসতে চাইলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে শতাধিক রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য আহত হয়েছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, সমাবেশের জন্য তাঁরা পূর্বে অনুমতি নিয়েছিলেন। এটা সাংবিধানিক অধিকার। অন্যান্য জায়গায় সমাবেশ হলেও পাকুন্দিয়ায় বিনা কারণে, বিনা উসকানিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ একসঙ্গে তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। এতে আহত হয়ে দুজন এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এ ঘটনায় তিনি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল আলম তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল পৌর বাজারে সমাবেশের দিকে আসতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ লাগে। পরে তা বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপ নিয়ে পৌর বাজার রণক্ষেত্র পরিণত হয়। এতে তিন পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।

পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, হাসপাতাল থেকে ১১ পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষও চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আইনজীবী জালাল উদ্দিন বলেন, পুলিশ বিনা কারণে তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অস্ত্র নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁদের দলের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে তাঁদের দুজন কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যে শ্রাবণ নামের একজন ছাত্রদল নেতা ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিউইতে চিকিৎসাধীন। অথচ উল্টো তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। তাঁরাও এ ব্যাপারে আদালতের মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নেবেন।

পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির আগুন-সন্ত্রাসকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে তাঁদেরও বেশ কয়েক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন