কুষ্টিয়া-৪ আসনে নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় আহত ৬

নির্বাচন পরবর্তী কুমারখালীর পৃথক কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষে দুজনকে মাথায় ও কোমরে কোপানো হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী ও খোকসা) আসনের বিজয়ী প্রার্থী আবদুর রউফ (ট্রাক প্রতীক) ও পরাজিত প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জের (নৌকা প্রতীক) সমর্থকেরা নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন। কুমারখালীর পৃথক কয়েকটি স্থানে এসব সহিংসতায় দুজনকে মাথায় ও কোমরে কোপানো হয়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও খেতের ফসল তছরুপের ঘটনা ঘটেছে।

সব মিলিয়ে উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে তোফাজ্জেল হোসেন (ট্রাকের সমর্থক) ও মানিক হোসেন (নৌকার সমর্থক) নামে গুরুতর আহত দুজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, গতকাল রোববার রাতে ভোট গণনার পরে কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের কালুপাড়া সেতু এলাকা হয়ে আবদুর রউফের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক বাড়িতে ফিরছিলেন। সে সময় পরাজিত সেলিম আলতাফ জর্জের লোকজন তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে আবদুর রউফ পক্ষের তোফাজ্জেলের মাথায় কোপানো হয়। তিনিসহ রউফ পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হন।

কুমারখালীতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ভাঙচুর করা একটি বাড়ি
ছবি: প্রথম আলো

এরপর দুবয়রা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামে ট্রাক ও নৌকার সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় নৌকার সমর্থক মানিককে কোমরে কোপানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, রাতে ট্রাকের সমর্থক ইসরাইল শেখের প্রায় ৭ শতাংশ জমির পেঁয়াজের চারা কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ইসরাইল যদুবয়রা ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামের মৃত হারু শেখের ছেলে। এ ছাড়া পান্টি, চাঁদপুর ও চর সাদিপুর ইউনিয়নে ট্রাক ও নৌকা উভয় পক্ষের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।

ট্রাক প্রতীকের সমর্থক ইসরাইল শেখের খেতজুড়ে কাটা পেঁয়াজের চারা পড়ে রয়েছে। সোমবার সকালে কুমারখালীর জোতমোড়া বিলের মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

আজ সোমবার সকালে জোতমোড়া বিলের মাঠে সরেজমিন দেখা যায়, ইসরাইল শেখের খেতজুড়ে কাটা পেঁয়াজের চারা পড়ে রয়েছে। উৎসুক লোকজন ভিড় করেছেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইসরাইল জানান, তিনি সকালে মাঠে গিয়ে দেখেন, তাঁর জমির দুই-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজের চারা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে তাঁর প্রায় ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ট্রাক মার্কায় ভোট দেওয়ায় নৌকার লোকজন তাঁর পেঁয়াজের চারা কেটে দিয়েছেন। তিনি থানায় অভিযোগ করবেন।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল হক বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচন পরবর্তী কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।