ঋণের চাপে হতাশাগ্রস্ত চা–দোকানির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় এক চা–দোকানির ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া বাজারের নিজের চায়ের দোকান থেকে অমল দাস (৪৫) নামের ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অমল দাস উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রণজিত দাসের ছেলে। গ্রামে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুই শতক জমির ওপর ঘর করে স্ত্রী, মা এবং দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন অমল দাস। তাঁর মেয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত। ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ক্রমাগত পরিবারের ব্যয় বাড়তে থাকায় একসময় বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া শুরু করেন অমল দাস। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ঋণের চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
পরিবার সদস্যরা ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে মল বাড়ি থেকে পাশের নারিকেলবাড়িয়া বাজারে নিজের চায়ের দোকানে যান। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বাড়ি থেকে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। সকাল নয়টার দিকে বাজারের এক ব্যক্তি চা খেতে এসে তাঁর দোকানের শার্টার বন্ধ দেখেন। এ সময় তিনি ভেতর থেকে মুঠোফোনের রিং বাজতে শোনেন। এরপর তিনি শাটার উঁচু করে দোকানের মধ্যে বাঁশের আড়ার সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় অমলের মরদেহ ঝুলতে দেখেন। পরে তিনি এলাকাবাসী ঘটনাটি জানান। এরপর এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
অমল দাসের চাচাতো ভাই প্রবীর দাস বলেন, অমল চা বিক্রি করে যা আয় করতেন, তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। মেয়ের লেখাপড়া এবং সংসারের ব্যয় মেটাতে তিনি কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নেন। এ ছাড়া কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকেও সাপ্তাহিক পরিশোধের শর্তে টাকা ধার নেন। ঋণের চাপে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন অমল। এ কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন বলেন, চা–দোকানি অমল দাস গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।