প্রথমবার প্রসূতির অস্ত্রোপচার 

এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতি স্বর্ণা শর্মাকে (২২) অস্ত্রোপচার করা হয়। এর মাধ্যমে ৩৬ বছর পর গতকাল এখানে অস্ত্রোপচারকক্ষের যাত্রা শুরু হলো। 

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক অনুসূয়া রায়ের কোলে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু। গতকাল অস্ত্রোপচার কক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ৩৬ বছর আগে ১৯৭৬ সালে। এত দিন এখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কোনো সন্তান প্রসব করেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার এখানে প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নিল এক শিশু।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচারকক্ষে গতকাল এক প্রসূতির অস্ত্রোপচারের সময় দরজায় অপেক্ষায় ছিলেন কয়েকজন নারী-পুরুষ। তাঁদের সবার চোখে মুখে যেন চিন্তার ছাপ। তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কিছু ভালো খবর জানার। দুপুর ১২টা। অস্ত্রোপচারকক্ষের ভেতর থেকে ভেসে এলো এক সদ্য জন্ম নেওয়ার শিশুর কান্নার শব্দ। তখন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সবার মুখ যেন আনন্দে ভেসে উঠল। এদিন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতি স্বর্ণা শর্মাকে (২২) অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর কোলজুড়ে আসে এক ফুটফুটে ছেলেসন্তান। এর মাধ্যমে ৩৬ বছর পর গতকাল এখানে অস্ত্রোপচারকক্ষের যাত্রা শুরু হলো। 

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি অ্যান্ড অবস্ কনসালটেন্ট ডা. অনুসূয়া রায় এই অস্ত্রোপচার করেন। শিশুর জন্মের পর এই চিকিৎসক বলেন, শিশু ও শিশুর মা উভয়েই ভালো আছে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় অস্ত্রোপচারকক্ষের সামনে দেখা হয় শিশুটির বাবা আনন্দ শর্মা সঙ্গে। তিনি একজন সেলুনশ্রমিক। পাশেই ছিলেন সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর ঠাকুমা গৌরিবালা শর্মা। তাঁদের বাড়ি শেরপুর পৌরশহরের গোসাইপাড়া এলাকায়। তাঁরা বলেন, এই অস্ত্রোপচার করতে তাঁদের কোনো টাকা গুনতে হয়নি। তাঁরা তাঁদের বংশধর সদ্যজাত শিশু ছেলের নাম দিয়েছেন সন্দীপ শর্মা। ডাক নাম দিয়েছেন অনুপ। 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই অস্ত্রোপচারকক্ষের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদার। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শেরপুর উপজেলার পাশাপাশি ধুনট ও নন্দীগ্রামসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলার অসংখ্য রোগী নিয়মিত চিকিৎসার জন্য আসেন।

শেরপুর পৌরশহরের তিনজন নারী বলেন, এখন শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতির অস্ত্রোপচার শুরু হওয়ায় সবার জন্য ভালো হলো। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচারকক্ষটি চালু বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারের পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিক বলেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচারের পাশাপাশি অন্যান্য অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।