বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীরা জুমার নামাজ শেষে আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী হাউজিং এস্টেট জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের পর প্রথম দিনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। পরে তিনি ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমার লক্ষ্য একটাই, বরিশাল নগরবাসীর মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া। নগরের স্থবির উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সচল করে বরিশাল নগরকে একটি উন্নত, আধুনিক, পরিবেশসম্মত নগরে রূপান্তর করা।
আবুল খায়ের আরও বলেন, ‘নগরবাসীর জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা থাকবে। ব্যক্তিগত জীবনে আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। বরিশাল আমার প্রাণের শহর, এই শহরের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার একমাত্র চাওয়া।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম নগরের সদর রোডে বায়তুল মুকাররম মসজিদে জুমার নামাজ শেষে শুরু করেন গণসংযোগ। পরে সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হল চত্বর থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচার শুরু করেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয়, জেলা-মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বলেন, বরিশাল নগরকে একটি শান্তি, সমৃদ্ধ নগরে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সারা দেশে এই নগর হবে মডেল। বরিশাল শহর হবে সব ধর্মের, বর্ণের মানুষের সমান সুযোগের শহর।
নগরের মতাসার আল আকসা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘ডুবন্ত নৌকায় কেউ উঠবে না। গতকাল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন কীভাবে জনগণ নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়েছে। গতকাল মির্জাগঞ্জ ও নাজিরপুরের উপনির্বাচনেও নৌকা ডুবে গেছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না। বিগত ১৫ বছর বরিশালের ভোটাররা ভোট দিতে পারিনি। এবার সুযোগ পেলে ভোটের বাক্স লাঙ্গলে ভরে যাবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান ওরফে রূপণ নগরের কালুশাহ সড়কের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে শুরু করেন গণসংযোগ। তাঁর পক্ষে নগরের ৩০টি ওয়ার্ডের সব মসজিদে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। কামরুল আহসান ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য। তাঁর বাবা বরিশালের প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামাল। তিনি বরিশাল নগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
কামরুল আহসান প্রচার চালানোর সময় বলেন, ‘আমার বাবা তাঁর জীবদ্দশায় বরিশালবাসীর সেবা করে গেছেন। তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। তিনি যে প্রতীক নিয়ে প্রথমবার পৌরসভার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন, সেই প্রতীক এবার আমার। আমি বাবার মতোই নগরবাসীর সুখ-দুঃখে পাশে থেকে সেবা করতে চাই।’
এদিকে নগরের ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা। কেউ কেউ প্রতীক পাওয়ার পর মিছিল নিয়ে বের হয়েছেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাত মিলিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।