শিবচরে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে পিটুনিতে আহত আরেকজনের মৃত্যু
মাদারীপুরের শিবচরে ইজিবাইক চোর সন্দেহে পিটুনিতে আহত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম হাসমত আলী ব্যাপারী (৫০)। আজ মঙ্গলবার বেলা দুটার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে একই ঘটনায় আহত মির্জন খালাসী (৪৩) নামের একজন গতকাল সোমবার রাতে মারা যান। এ নিয়ে চোর সন্দেহে পিটুনিতে দুজনের মৃত্যু হলো।
এদিকে ওই চোর চক্রের দুই সদস্যকেও আটক করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কাশিপুর এলাকার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে মোস্তফা কামাল (৫০) এবং পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালি এলাকার মৃত ফকু হাওলাদারের ছেলে সাগর হাওলাদার (৪২)।
নিহত হাসমত হাসমত আলী ব্যাপারী সদর উপজেলার ছিলারচর এলাকার রতন ব্যাপারীর ছেলে। নিহত মির্জন খালাসী শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের সুম্ভুক এলাকার মৃত আবু আলী খালাসীর ছেলে। পুলিশ বলছে, পিটুনিতে নিহত দুজনই চোর চক্রের দলের সদস্য। তাঁরা এর আগেও ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাইয়ের কাজে লিপ্ত ছিলেন।
পিটুনিতে দুজন নিহতের ঘটনায় তদন্ত শেষে মামলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল গতকাল মধ্যরাতের দিকে সুম্ভুক এলাকার হালিম ফকিরের বাড়িতে পাঁচজনের এক সংঘবদ্ধ দল ইজিবাইক চুরির জন্য যান। এ সময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে আশপাশের লোকজন জেগে ওঠেন। সংঘবদ্ধ চোর চক্রটি বাড়ির পাশের এক ঝোপের মধ্যে গিয়ে লুকায়। এলাকায় ‘ডাকাত পড়েছে’ এমন খবরে এলাকাবাসী বের হয়ে এসে ধাওয়া করেন ওই চক্রের লোকজনকে। এ সময় চক্রের অন্য তিনজন পালিয়ে গেলেও চরছলেনামা এলাকায় রাত সাড়ে তিনটার দিকে মির্জন ও হাসমতকে আটক করে পিটুনি দেন উত্তেজিত জনতা। মির্জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসমতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ দুপুর দুটার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসমত আলী ব্যাপারী আজ সকাল সাতটার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ইজিবাইক চুরির উদ্দেশ্যে চরছলেনামা এলাকায় গেলে তাঁদের এলাকাবাসী পিটুনি দেন। পরে তাঁদের পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে আহত একজনকে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি মৃত। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার প্রথম আলোকে বলেন, পিটুনিতে দুজন নিহতের ঘটনায় তদন্ত শেষে মামলা হবে এবং অপরাধীদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে।