জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালত চত্বর থেকে অপহরণ হওয়া তিনজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নাম লাল মিয়া (২৯)।
শুক্রবার দুপুরে পুলিশ জানায়, অন্য অপহরণকারীরা পালিয়ে গেলেও লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহৃত তিনজনের কাছ থেকে নেওয়া ৫০ হাজার টাকার মধ্যে লাল মিয়ার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার করা তিনজন হলেন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (৩০), একই গ্রামের নেসার উদ্দিনের ছেলে হিমেল মিয়া (১৯) ও আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের নোয়ামোড়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে মুন্না মিয়া (৩৫)। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জেলা শহরের ভাদুঘর রেললাইনের পাশ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সোহাগ মিয়া বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে লাল মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের লাল মিয়ার সঙ্গে ওই তিনজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। কয়েক দিন আগে লাল মিয়ার সঙ্গে তাঁদের ঝগড়া হয়। এ ঘটনায় লাল মিয়া তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে হিমেল, সোহাগ ও মুন্না আদালতে আত্মসমর্পণ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসেন। আদালত তাঁদের জামিন দেন।
বেলা দেড়টার দিকে থেকে আদালত চত্বরের সামনের রাস্তায় মামলার বাদী লাল মিয়া তাঁদের পথরোধ করেন। এরপর তাঁর খালাতো ভাই সাহস মিয়াসহ ৬-৭ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রের মুখে তিনজনকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান। প্রথমে তাঁদের শহরের ওয়াপদার ভেতরে ও পরে ভাদুঘর রেললাইনের পাশে বাঁশঝাড়ের নিচে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তাঁরা।
একপর্যায়ে লাল মিয়া ও সাহস মিয়া তাঁদের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাঁদের ট্রেনের নিচে ফেলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় তিনজন তাঁদের স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা লাল মিয়ার বিকাশ নম্বরে এনে দেন। এরপর সুযোগ বুঝে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সহায়তা চান তাঁরা।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সদর থানা–পুলিশ ভাদুঘর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেললাইনের পাশ থেকে তিনজনকে উদ্ধার এবং লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় লাল মিয়ার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যম নেওয়া ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।