খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আজগর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছেছবি: সংগৃহীত

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরফপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামকে হত্যার অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আজগর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা নগরে রায়ের মহল এলাকায় অবস্থিত বিশ্বাস প্রোপার্টিজের কার্যালয় থেকে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁকে আটকের বিষয়টি পুলিশের তরফে স্বীকার না করলেও আজ সকালে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা আজগর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

আরও পড়ুন

আজগর বিশ্বাস আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি ‘বিশ্বাস প্রোপার্টিজ’ নামের একটি আবাসন প্রকল্পের মালিক। গত জুন মাসে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।

গতকাল বিকেলে আজগর বিশ্বাসের ছোট ভাই তারেক বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে বিশ্বাস প্রোপার্টিজের কার্যালয় থেকে তাঁর বড় ভাইকে তুলে নিয়ে যায় জেলা ডিবি পুলিশ।

শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে শরফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই সময় তিনি ডুমুরিয়া থেকে মোটরসাইকেলে করে খুলনার বাসায় ফিরছিলেন। স্ত্রীর চাকরির সুবাদে তিনি খুলনা নগরের নিরালা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছন থেকে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে।

এ ঘটনায় রোববার রাতে রবিউল ইসলামের স্ত্রী শায়লা ইরিন বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব থেকে রবিউলকে খুন করা হতে পারে বলে এজাহারে লেখা হয়।

২০১১ সালে প্রথমবার ডুমুরিয়ার শরফপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শেখ রবিউল ইসলাম। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। প্রথমবারই ১৮ বছর ক্ষমতায় থাকা চেয়ারম্যান নূরুদ্দিন আল মাসুদকে পরাজিত করে জয়ী হন রবিউল ইসলাম।

আরও পড়ুন

রবিউল ইসলামের বড় ভাই শেখ মনজিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে শুধু শরফপুর ইউনিয়নেই চারজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া গুম করা হয় আরেকজনকে। যাঁরা খুন হন, তাঁরা সবাই উঠতি নেতা ছিলেন। এসব ঘটনার কারণেই রবিউল চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই শঙ্কা ছিল, যেকোনো সময় হয়তো তাঁকেও খুন করা হতে পারে। ২০১৪ সালে খুলনা নগরের বাবুখান রোডে খুন হন রবিউল ইসলামের একনিষ্ঠ সমর্থক জাকির হোসেন। এতে শঙ্কা আরও বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে বারবার রবিউলকে সতর্কও করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।