সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন-বিক্ষোভ

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন-পরবর্তী বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডেছবি: প্রথম আলো।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এর আগে গতকাল রোববার ও ৬ জুন কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে একই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হন। এগুলোর মধ্যে ছিল ‘মেধাবীদের কান্না আর না আর না’, ‘কোটা-বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে’, ‘মেধাবীদের যাচাই করো; কোটাপদ্ধতি বাতিল করো’, ‘১৮-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’ ইত্যাদি। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিবের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্যসচিব আমানুল্লাহ আমান, স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব ও পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনের জেরে এক পরিপত্রের মাধ্যমে কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটি বাতিল করেন উচ্চ আদালত। এর পর থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হয়েছে। এবার তাঁদের আন্দোলন একেবারে কোটা বাতিলের দাবিতে নয়। তাঁরা চান, সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা থাকুক। এ ছাড়া কোটাসুবিধা ভোগকারী কোনো ব্যক্তি যেন জীবনে শুধু একটি ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা নিতে পারেন, সেই দাবিও জানান তাঁরা।

আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘কোটা সম্পূর্ণ বাতিল হোক, সেটি আমাদের দাবি নয়। এ দেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অতুলনীয়। তবে তাই বলে তাঁদের জন্য বিপুল পরিমাণ কোটা রাখার কোনো মানে হয় না। একজন কোটাধারী একাধিকবার কোটাসুবিধা ভোগ করায় কোটাবিহীন শিক্ষার্থীরা সব ক্ষেত্রেই তাঁদের থেকে পিছিয়ে থাকেন। আমরা কোটা বাতিল চাই না, কোটাপদ্ধতির সংস্কার চাই। চাকরিতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হোক। সেই সঙ্গে কোটা সুবিধাভোগকারী কোনো ব্যক্তি যেন জীবনে যেকোনো একটি ক্ষেত্রে কোটার সুবিধা নিতে পারেন।’

মেহেদী সজীব বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য; কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশে একজন কোটাধারী শিক্ষার্থী তাঁর জীবদ্দশায় একাধিকবার কোটার সুবিধা পান। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।’