মেয়াদ শেষ হওয়ার চার বছর পর কুয়েট ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

ছাত্রলীগের লোগো

মেয়াদ শেষ হওয়ার চার বছর পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কমিটির জন্য জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের কুয়েট শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নেতা–কর্মীদের আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, উপসমাজসেবা সম্পাদক আহমেদ নাসিম ইকবাল এবং উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক আল মামুন।

কমিটি বিলুপ্তির বিষয়ে কুয়েট ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান বলেন, কমিটির মেয়াদের বিষয়ে কেন্দ্র অবগত ছিল। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্র। নতুন নেতৃত্ব নতুন উদ্যমে কুয়েট ছাত্রলীগকে এগিয়ে নেবে।

কুয়েট ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুয়েটে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের এক বছরমেয়াদি কমিটি হয়। কমিটির সভাপতি হন আবুল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ওই সময়ই দুজন সহসভাপতি, দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিনজনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পান ২২১ জন। সেই ‘এক বছরের’ কমিটি এত দিন বহাল ছিল। এই সময়ে ছাত্রলীগের হল কমিটিও হয়নি। কমিটির বেশির ভাগ নেতার এখন আর ছাত্রত্ব নেই। অনেকে ক্যাম্পাস থেকে চলে গেছেন।

কমিটি গঠনের পরের এক বছর শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিল। পরে অবশ্য তাঁরা এক হয়ে কাজ করেছেন। এর মধ্যে সভাপতি আবুল হাসান গত বছরের মে মাসে পদে অব্যাহতি দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। আবুল হাসান দায়িত্ব ছাড়ার পর নাহিয়ান একক নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্রিয় হন। এদিকে কমিটির বয়স অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে যায় ছাত্রলীগ।

গত ৩০ নভেম্বর কুয়েটের লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন (৩৮) ক্যাম্পাসের পাশের ভাড়া বাসায় মারা যান। অভিযোগ ওঠে, ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর মানসিক নিপীড়নের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর থেকে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে কুয়েট ছাত্রলীগের কার্যক্রম। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে চারজনকে চিরতরে কুয়েট থেকে বহিষ্কার, সাতজনকে দুই শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার এবং একজনকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়।

এর বাইরে ৩২ শিক্ষার্থীকে জরিমানাসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়। শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী ছিলেন।