সোয়া কোটি টাকার বিল বকেয়া, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তোপের মুখে আবার চালু

সোয়া কোটি টাকার বিল বকেয়া। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়। তারপরও বকেয়া বিল পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ–সংযোগ কাটতে যায় বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃপক্ষ। সংযোগ বিচ্ছিন্নও করে দেওয়া হয়। তবে তোপের মুখে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেড় ঘণ্টা পর আবার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও তাঁদের সহযোগীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে মেয়রের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে পুনরায় বিদ্যুৎ–সংযোগ দেয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

কুমারখালী ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮৬৯ সালে স্থাপিত কুমারখালী পৌরসভা কার্যালয়ে বিদ্যুতের ৯টি মিটার রয়েছে। এর মধ্যে ২০০৭ সাল থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৬টি মিটারে ১ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বিল পরিশোধের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ বারবার পৌর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৮ মে নোটিশ পাঠানো হয়। তবুও বিল পরিশোধ না করায় গতকাল দুপুরের পর ছয়টি মিটারের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পৌরসভার মিটারগুলো ডিজিটাল থেকে প্রিপেইডে পরিবর্তন করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বকেয়া বিল পরিশোধে টালবাহানা শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর বর্ধিত বিলের প্রতিকার চেয়ে ২০২৩ সালের জুন মাসে কুষ্টিয়া সিভিল কোর্টে একটি মামলা করে পৌর কর্তৃপক্ষ। ওই মামলা চলছে।

এক যুগের বেশি সময় ধরে কুমারখালী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সামছুজ্জামান অরুন। তিনি বলেন, বিলের রেট নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল, তা মিটমাট হয়ে গেছে। শিগগিরই বিষয়টি সুরাহা হবে।

কুমারখালী ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, পৌরসভায় ২০০৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা পুঞ্জিভূত বকেয়া বিল রয়েছে। বারবার বিল পরিশোধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ না করায় ছয়টি মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। এ নিয়ে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। পরে উপজেলা প্রশাসন উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে। সেখানে বিল পরিশোধের আশ্বাস দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে পুনরায় পৌর ভবনে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত বলেন, দুটোই সরকারি প্রতিষ্ঠান। সে জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। খুব দ্রুত উভয় পক্ষ তাদের সমস্যা মিটিয়ে নেবে।