মাদকসহ আসামি ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র

শরীয়তপুরের জাজিরায় মাদকসহ আটক দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের সূর্যমণি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

বড় গোপালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাগর মাদবর (৩২) লোকজন নিয়ে এই হামলা চালান বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় সাগরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাজিরা থানায় মামলা করেছেন থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বেলাল হোসেন। ঘটনার পর সাগর ও তাঁর লোকজন এলাকা থেকে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, যুবলীগ নেতা সাগর মাদবরের নামে জাজিরা থানায় মারামারি, হত্যাচেষ্টাসহ অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। তাঁর ভাই সবুজ মাদবরের (৩৫) বিরুদ্ধে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের ছয়টি মামলা রয়েছে। তাঁদের অনুসারী আরিফ মাদবরের (৩৭) বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে ছয়টি মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাজিরা থানার এএসআই বেলাল হোসেন গতকাল বুধবার রাতে তিন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে সূর্যমণি বাজারের বালুর মাঠ এলাকায় অভিযান চালান। সেখানে নদীর তীরবর্তী একটি স্থান থেকে গাঁজাসহ আরিফ মাদবর ও সবুজ মাদবরকে আটক করেন। খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা সাগর মাদবর কয়েকজন লোক নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। তাঁদের মারধর করে দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। পুলিশ সদস্যদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করেন।
পরে জাজিরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুজন হকের নেতৃত্বে ১০–১২ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে সাগর মাদবর আসামিদের নিয়ে পালিয়ে যান। হামলায় আহত চার পুলিশ সদস্যকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, সাগর ও তাঁর লোকজন এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত। এ ঘটনার দুই দিন আগে মাদকদ্রব্য বিক্রির তথ্য পেয়ে সাগরের ভাই সবুজকে তাড়া করেন জাজিরা থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা। ওই সময় কৌশলে নদী পার হয়ে পালিয়ে যান সবুজ। ওই ঘটনার পর থেকেই তাঁরা পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হন।

জাজিরা থানার এএসআই বেলাল হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে সংবাদ ছিল কয়েজন ব্যক্তি সূর্যমণি বাজারের আশপাশে গাঁজাসহ মাদকদ্রব্য বিক্রি করছেন। তাঁরা অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করেন। এ সময় আসামিরা ‘ডাকাত’ বলে চিৎকার দেন। তখন সাগর লোকজন নিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারধর করে সবুজ ও আরিফকে ছিনিয়ে নেন।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা সাগরের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাদক কারবারিদের ধরতে অভিযান পরিচালনার সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।