কৃষককে আটকে রেখে মারধর, গোপালগঞ্জে কৃষি ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের রামদিয়া শাখায় এক কৃষককে আটকে রেখে মারধরের ঘটনায় ওই ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া গোপালগঞ্জ কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক মো. আবদুল আজিজ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।

আবদুল আজিজ বলেন, ‘কৃষককে মারধরের ঘটনায় আমিসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না।’

আবদুল আজিজ ছাড়াও বরখাস্ত হওয়া অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন কৃষি ব্যাংকের রামদিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইলিয়াস হোসেন ও তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) রাফিজুল ইসলাম। মারধরের শিকার ওই কৃষকের নাম দেনায়েত সরদার। তিনি কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগে গাভি মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য তিন লাখ টাকা ঋণ নিতে কৃষি ব্যাংকের রামদিয়া শাখায় যান দেনায়েত সরদার। এ সময় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ছবিসহ অন্যান্য কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিয়ে আসেন। গত ২০ আগস্ট ব্যাংকের তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) রাফিজুল ইসলাম ওই কৃষকের বাড়িতে সরেজমিনে তদন্তে যান। তখন তিনি মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে কিছু উৎকোচ দাবি করেন। দেনায়েত সরদার উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় ‘দায়-দেনার’ কারণ দেখিয়ে ঋণের আবেদন বাতিল করে দেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে ৭ সেপ্টেম্বর কৃষক দেনায়েত সরদার বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ সেলে ই-মেইলের মাধ্যমে একটি অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত সোমবার গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ ও তাঁর সহযোগীরা অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য কৃষি ব্যাংকের রামদিয়া শাখায় যান। তদন্ত চলাকালে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি অতর্কিত ব্যাংকে ঢুকে অভিযোগকারী দেনায়েত সরদার ও তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলে ও জামাতার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁরা ব্যাংকের সব ফটক ও দরজা এবং ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনেই তাঁদের মারধর করেন।
পরে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার কৃষক দেনায়েত সরদার (৬২) বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা করেন।