পুলিশের বাধায় বরগুনায় গণমিছিল যেতে পারেনি ৪ উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীরা

বরগুনায় বিএনপির গণমিছিল উপলক্ষে সড়কে পুলিশের অবস্থান। শনিবার বেলা ১১টার দিকে পৌরসভার সামনের সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরগুনায় জেলা বিএনপি আয়োজিত গণমিছিলে অংশ নিতে যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়েছেন আমতলী, তালতলী, বেতাগী ও বামনার নেতা-কর্মীরা। এ কারণে তাঁরা আজ শনিবার গণমিছিলে অংশ নিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবির বাস্তবায়ন এবং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ গণমিছিলের ডাক দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।

বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার আবদুস ছালাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির কেউ আমাকে জানাননি। পুলিশ কেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেবে? আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন সময় চেকপোস্ট করতে পারে পুলিশ। বড়দিন উপলক্ষে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

আজ সকালে আমতলী উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক জালাল আহম্মেদ ফকির ও সদস্যসচিব তুহিন মৃধার নেতৃত্বে তিন শতাধিক নেতা-কর্মী বরগুনায় গণমিছিলে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে আমতলী ফেরিঘাটে আসেন। সেখানে আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রণজিৎ কুমার সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ ফেরি ও খেয়া চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বরগুনা যেতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা ফেরিঘাটে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরিঘাটে আসামাত্র পুলিশ ফেরি ও খেয়া চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ফিরে এসেছি।’

সকালে দুই ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল বলে স্বীকার করেছেন আমতলী ফেরিঘাটের পরিচালক মো. হাসান মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।

আরও পড়ুন

তবে ফেরি ও খেয়া চলাচল বন্ধ রাখার কথা অস্বীকার করে রণজিৎ কুমার সরকার বলেন, ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরি ও খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা হয়তো সময়মতো ফেরিঘাটে আসতে পারেননি। তাই তাঁরা বরগুনায় যেতে পারেননি।

এদিকে আজ তালতলী উপজেলার ছোটবগী ও নকরি ঘাটের খেয়া চলাচলও পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছিল। এতে তালতলীর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বরগুনায় গণমিছিলে যেতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছোটবগী খেয়াঘাটের এক মাঝি বলেন, তালতলী থানার পুলিশের নির্দেশে দুই ঘণ্টা খেয়া চলাচল বন্ধ ছিল। পরে বেলা ১১টার পর খেয়া পারাপার শুরু হয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে তালতলী থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন মুঠোফোনে কল করলে তিনি ধরেননি।

এদিকে গণমিছিলে যাওয়ার পথে বেতাগী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ূন কবীর মল্লিকের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মীকে বেতাগী বাসস্ট্যান্ড ও চান্দখালী বাইপাসে পুলিশ বাধা দেয়। হুমায়ূন কবীর মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরগুনায় যাওয়ার পথে দুই স্থানে পুলিশের বাধার মুখে আমিসহ নেতা-কর্মীরা এসেছি।’

এ বিষয়ে বেতাগী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেতাগী বাসস্ট্যান্ড ও চান্দখালী বাইপাসে আমাদের চেকপোস্ট ডিউটি ছিল। আমরা কাউকে বাধা দিইনি। বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ মিথ্যা।’

বামনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, সকাল নয়টার দিকে নেতা-কর্মীসহ তিনি বামনা খেয়াঘাটে এসে দেখেন, পুলিশ খেয়া ও ট্রলার নদীর মাঝখানে নিয়ে রেখেছে। তবে বামনা থানার ওসি বশিরুল আলম বলেন, বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়।