এক দিনে কাশিমপুর কারাগারের দুই বন্দীর মৃত্যু
এক দিনে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের দুই বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামির মৃত্যু হয় গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে। এদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট ২–এর এক বন্দী শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আগের দিন তিনি কারাগারের ভেতর বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যাওয়া বন্দীর নাম মো. আকরাম (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার মির্জাপুর গ্রামে কামাল হোসেনের ছেলে। কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আকরামের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি কারাগারের ভেতরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন অসুস্থ হয়ে বন্দী আকরামের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
একই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট ২-এর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দী ওয়াজেদ আলী ফরাজী। তিনি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার দানসাগর গ্রামের নজরুল ইসলাম ফরাজীর ছেলে। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকার সাভার থানার একটি মামলায় তিনি যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট ২–এ প্রায় ২০ বছর ধরে বন্দী আছেন। আসামির কয়েদি নম্বর-৭৪৮২/এ।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার দিবাগত রাতে ওয়াজেদ আলী বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই দিন রাতেই তাঁকে কারারক্ষীদের প্রহরায় ডান্ডাবেড়ি, হ্যান্ডকাফসহ অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে হাসপাতালের সিসিইউ ওয়ার্ডে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, কারাগার থেকে আনা ওই আসামি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ওই কারাগারের জেল সুপার আমিরুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।