নজর কেড়েছে কাঞ্জিবরণ

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। এ ঈদ উপলক্ষে রংপুর নগরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে বেচাকেনা জমে উঠেছে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রংপুর নগরে বিভিন্ন বিপণিবিতানে বিক্রি বেড়েছে। একটি দোকানে শাড়ি দেখছেন ক্রেতারা। গতকাল রংপুর নগরের তালতলা বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের ঈদবাজারে এবার দেশি-বিদেশি শাড়ি ও থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে বেশি। শাড়ির মধ্যে নারীদের পছন্দের শীর্ষে জয়পুরি, কাঞ্জিবরণ ও বেনারসি। এ ছাড়া হাফসিল্ক, জামদানি, খাদি, মাসরাইজ শাড়ির চাহিদা রয়েছে।

শাড়ি ১ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং থ্রি-পিস ২ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও জমে উঠেছে ঈদবাজার। সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতাদের কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। ঈদের এক সপ্তাহ আগে ভিড় ও বিক্রিবাট্টা বাড়বে বলে বিক্রেতারা আশা করছেন।

গত বুধবার রাত ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের কামালকাছনা, স্টেশন রোড, বেতপট্টি, পায়রা চত্বর এলাকা থেকে শুরু করে সবখানে জমজমাট ঈদের বাজার। এবারের ঈদে তরুণী ও নারীদের পছন্দ থ্রি-পিস ও শাড়ি। তরুণ, যুবক ও বয়স্করা পাঞ্জাবি-পাজামা-প্যান্টই বেশি কিনছেন। বিক্রেতাদের ভাষ্য—রমজানে রাতের বেলায় ঈদবাজার বেশি জমজমাট থাকে। রাত যত বাড়ে, ঈদের কেনাকাটা তত বাড়ে।

নগরের জাহাজ কোম্পানি মোড়ের পাশে ‘পাঞ্জাবিওয়ালা’ দোকান আকর্ষণীয় নকশার পাঞ্জাবির জন্য খ্যাতি পেয়েছে। এখানে হরেক রকমের পাঞ্জাবি পাওয়া যায়। বুধবার রাতে পাঞ্জাবি কিনতে আসা অনেকের দেখা মিলল। স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে এসেছেন হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ঘুরেফিরে দেখছি। পছন্দ হয়েছে। তবে দাম গত বছরের চেয়ে বেশি। এরপরও সন্তান আর নিজের জন্য একই পাঞ্জাবি কিনব।’

পাঞ্জাবিওয়ালা দোকানের মালিক রিপন শেখ বলেন, ‘নানা রকমের পাঞ্জাবি রয়েছে। ক্রেতাদের পছন্দও হচ্ছে। প্রথম দিকে কেনাকাটা কম হলেও এখন বেশ জমে উঠেছে। আশা করি, শেষ পর্যন্ত ভালো হবে।’

গতকাল দুপুরে শহরের তালতলা রোডে শাড়িঘরে নারীদের ভিড় লক্ষ করা গেল। এখানে একটার পর একটা শাড়ি উল্টেপাল্টে দেখছেন নারী ক্রেতারা। শাড়িঘরের বিক্রয়কর্মী গোলাপ মিয়া বলেন, ‘এবার নারীদের পছন্দে রয়েছে জয়পুরি আর কাঞ্জিবরণ শাড়ি। প্রকারভেদে দেড় হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে ক্রেতারা শাড়ি পছন্দ করছেন।’

জাহাজ কোম্পানি মোড়ের আশপাশ এলাকায় নামীদামি কাপড়ের দোকান ও শপিং কমপ্লেক্স। ‘রয়ালিটি’ মেগামলেও উপচে পড়া ভিড়। রিজিয়া বেগম নামের এক গৃহবধূ তাঁর দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে ছেলেমেয়ের জন্য পার্টি ড্রেস কিনতে এসেছি।’

রয়ালিটি মেগামলের স্বত্বাধিকারী তানভীর আশরাফি বলেন, শিশুদের পার্টি ড্রেস, কটি ড্রেস ও পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। শিশুদের কাপড় প্রকারভেদে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তরুণীদের থি-পিস ও তরুণদের প্যান্টের চাহিদাও রয়েছে।

সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, মতি প্লাজা, রজনীগন্ধা বিপণিবিতান, জেলা পরিষদ মিনি সুপার মার্কেটে আকর্ষণীয় সব পোশাক কিনতে তরুণ-তরুণীরা ভিড় করছেন।

বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। কিছু দোকানে বিক্রয়কর্মীদের শাড়ি গায়ে জড়িয়ে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে দেখা গেছে। পোশাকের পাশাপাশি নবাবগঞ্জ মার্কেটে গয়না, কসমেটিকসহ ঘর গোছানোর জন্য সাজসরঞ্জাম কিনছেন কেউ কেউ। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে ভিড় দেখা যায়।

এ ছাড়া রংপুর নগরের হনুমানতলায় কমদামি বাজারে ঈদের কেনাকাটায় মানুষের ভিড় বেড়ে চলেছে। মেয়েদের জামা, থ্রি–পিস, নারীদের শাড়ি, ছেলেদের শার্ট–প্যান্ট, অন্যান্য কাপড়ের দামও এখানে অনেক কম বলে সরেজমিনে দেখা যায়।

পোশাকের পাশাপাশি নানা প্রসাধনী, কাচের চুরি, মাটির গয়না ও সাজসরঞ্জামের সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার বিক্রি অনেক ভালো।