বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সারা দুনিয়া আজ বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় আসেনি। এখনো সরকার নির্বাচনের নামে যা করছে, তা আসলে প্রহসন।
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে শুক্রবার বেলা তিনটায় সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকারের মসনদ এখন দোদুল্যমান মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপিসহ দেশের অন্যান্য আন্দোলনকামী দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জন করবে। এই সিদ্ধান্তের আলোকে বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে নির্বাচন আমাদের সাথিরা বর্জন করেছেন। আগামী দুয়েক দিনের দিনের মধ্যে আরও ভালো খবর পাবেন বলে আশা করি।’
এ সময় সমাবেশে উপস্থিত সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান ওরফে কয়েস লোদীর কথা উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চার-পাঁচবারের নির্বাচিত কমিশনার নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন দল তাঁদের মর্যাদা দেব। আর যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাঁদের কী হয়েছে, সেটি দেখেছেন আপনারা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর হয়েছেন একজন। তিনি শ্রমিক দলের নেতা। তারপরও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি। এর মানে হলো, আমরা নিজেরা নির্বাচনে প্রার্থী হব না এবং অন্য কারও নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নেব না।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘জনগণ চায় পরিবর্তন, জনগণ চায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, জনগণ চায় তারেক রহমানের নেতৃত্ব। সেই নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। সময় এসেছে, আমরা সে সময় কাজে লাগানোর প্রস্তুতি নেব। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এই লড়াইয়ে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরবে।’
সমাবেশে উপস্থিত সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে আগামীকাল শনিবার সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে তাঁর সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।
‘গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়ন’–এর দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী।
এতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী সঞ্চালনা করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।
স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। আরও বক্তব্য দেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হাসান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে শেষে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টায় গিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা।
বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আজকের সমাবেশের জন্য ১৪ মে সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠের অনুমতি চেয়ে মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। দফায় দফায় আলোচনার পর আজ শুক্রবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়।