খুলনা শহরে দুই খুনের রহস্য উন্মোচনের দাবি পুলিশের
খুলনায় নিহত মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের বিক্রয় প্রতিনিধি আল আমিন শেখ (ইমন) ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি)। তদন্তে উঠে এসেছে, স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে আল আমিন এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অর্ণবকে হত্যা করা হয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি আল আমিনকে ছুরিকাঘাতে এবং গত ২৪ জানুয়ারি অর্ণবকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। জোড়া খুনের বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে প্রেস বিফ্রিং করেন কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. কুতুব উদ্দিন। তিনি জানান, নিহত আল আমিনের স্ত্রীর সঙ্গে খুলনা বড় বাজারের এক ব্যবসায়ীর সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জেনে ফেলেন আল আমিন। এটা নিয়ে ওই ব্যবসায়ী ও আল আমিনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আল আমিনকে শায়েস্তা করার জন্য তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওই ব্যবসায়ী। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আগের কর্মচারী নাইম ও মুন্সী নামের দুই ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটায় ওই ব্যবসায়ী, নাইম ও মুন্সী ট্রাকস্ট্যান্ড কাঁচাবাজারের সামনে উপস্থিত হন। এ সময় আল আমিন মোটরসাইকেলে করে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার ২২ তলার সামনে এসে পৌঁছালে ওই তিনজন মিলে পেছন দিক থেকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে আল আমিনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন নিহত আল আমিনের ভাই রাজিবুল ইসলাম সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
অর্ণব হত্যা নিয়ে মো. কুতুব উদ্দিন জানান, ২৪ জানুয়ারি খুলনা মহানগরের সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার তেঁতুলতলা মোড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকারকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেন। ইতিমধ্যে অর্ণব হত্যা মামলায় ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে ইনসান শরীফ নামের একজনকে একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি গুলি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলসহ আটক করা হয়। শাহরিয়া সজল ও মাহিন হোসেন নামের দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য আসামিরা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার এবং মামলা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু ও কালা লাবলু-পলাশ গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত অর্ণব কালা লাবলু-পলাশের বন্ধু ছিলেন।